রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৬ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা নিয়ে শুনানি আজ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৯
  • ২২৬ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) দাবি করা পাওনা ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা শর্ত সাপেক্ষে দিতে রাজি হয়েছে মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোন। মামলাটি শুনানির জন্য আজকের (১৮ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

গত ১৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে এমন তথ্য জানিয়েছেন গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস। বিষয়টি সোমবারের (১৮ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের (কজলিস্টের) কার্যতালিকার শীর্ষে শুনানি ও আদেশের জন্য রয়েছে।

সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে ওই দিন গ্রামীণফোনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মেহেদী হাসান চৌধুরী, শরীফ ভূঁইয়া ও আইনজীবী তানিম হোসেইন শাওন। অন্যদিকে বিটিআরসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।

ওই দিন শুনানিতে অর্থমন্ত্রী ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে সমঝোতা বৈঠকের প্রস্তাবনা অনুযায়ী এই পরিমাণ টাকা পর্যায়ক্রমে বিটিআরসিকে দিতে সম্মতির কথা জানায় গ্রামীণফোন। তবে এর বিরোধিতা করে বিটিআরসির আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেন, গ্রামীণফোনের কাছ থেকে বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞা আমরা স্থগিত চাই।

এ বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য সোমবার দিন ঠিক করেছেন আপিল বিভাগ। এর আগে গত ৩ অক্টোবর অর্থমন্ত্রী ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সঙ্গে গ্রামীণফোনের এক সমঝোতা বৈঠকে পাঁচটি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবগুলো হলো :

১. দুই পক্ষ একটি কমিটি গঠন করে পাওনা পরীক্ষা অথবা পরীক্ষার পদ্ধতি বের করবে।
২. বিটিআরসি লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ ও নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে। অন্যদিকে অপারেটররা মামলা প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেবে।

৩. অর্থমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, এনবিআর ও বিটিআরসির চেয়ারম্যান কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে রাখবেন।

৪. কমিটি গঠন ও কমিটির কাজ শুরুর আগে আগামী সাত দিনের মধ্যে গ্রামীণফোন ১০০ কোটি ও পরের এক মাসের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা বিটিআরসিকে দেবে। রবি দেবে দুই দফায় ৫০ কোটি টাকা।

৫. এসব প্রস্তাব দুই অপারেটর তাদের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যালোচনা ও অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করবে।

আদালতের শুনানিতে গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, গত ৩ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমরা কিছু শর্ত দিয়েছি। তারা শর্তগুলো মানলে আমরা ২০০ কোটি টাকা দিতে রাজি আছি।
অন্যদিকে, বিটিআরসির আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতের কাছে গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটির সকল টাকা আদায়ের ওপর হাইকোর্টের আদেশে দেয়া নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত চেয়েছেন। অর্থাৎ বিটিআরসির পাওনা সকল টাকাই দাবি করেন।

পরে গ্রামীণফোনের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেন, গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে ২০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত আছি যদি কোম্পানির শর্ত মেনে নেয়।

এদিকে, বিটিআরসির আরেক আইনজীবী খোন্দকার রেজা-ই রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, অর্ধেক টাকা দিতে সম্মত হলে আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি। তবে এ বিষয়ে আদালত আদেশের জন্য সোমবার দিন নির্ধারণ করেছেন।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিটিআরসির লিভ টু আপিলের শুনানি নিয়ে গত ২৪ অক্টোবর গ্রামীণফোন ন্যূনতম কত টাকা দিতে পারবে তা জানতে চেয়ে ৩১ অক্টোবর আদেশের জন্য রেখেছিলেন আপিল বিভাগ। কিন্তু সে হিসাব গ্রামীণফোন দিতে না পারায় দুই সপ্তাহ সময় নিয়েছিল। আজ শুনানির নির্ধারিত দিনে গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে দুই শত কোটি টাকা দিবে তবে, সেটা শর্ত সাপেক্ষে।

এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন আপাতত বিটিআরসিকে কত টাকা দিতে পারবে তা জানাতে বলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তারও আগে গত ১৭ অক্টোবর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আদায়ের ওপর দুই মাসের অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতি আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। পরে সে আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিটিআরসি।

এর আগে প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে গ্রামীণফোনকে গত ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। এই চিঠির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে। এরপর গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন। পরে ওই আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে দুই মাসের জন্য গ্রামীণফোনের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com