নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর থেকে সচিবালয়ের চারপাশ অর্থাৎ জিরো পয়েন্ট থেকে পল্টন মোড়, কদম ফোয়ারা, শিক্ষা ভবন মোড় এলাকাকে ‘নীরব জোন’ বা ‘শব্দবিহীন’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এসব এলাকায় কোনো পরিবহনকে কোনো প্রকার হর্ন বাজাতে বা শব্দ সৃষ্টি করতে দেয়া হবে না। ঢাকা শহরে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণের পাইলট কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার বায়ু ও শব্দ দূষণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে হাইড্রোলিক হর্ন পুরোপুরি বন্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শহরে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রয়োজনীয় শব্দের উৎস সন্ধান করে তা বন্ধ করা হবে।
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে গৃহীত সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ইটভাটায় যাতে পরিবেশ দূষণকারী পদার্থের নির্গমন বন্ধ হয় তা নিশ্চিত করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে প্রতিদিন সকাল ও দুপুর দুবার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পানি ছিটানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিআরটি এবং মেট্রোরেল প্রকল্পকেও নিজস্ব উদ্যোগে পানি ছিটানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
তিনি জানান, ইট বালি মাটিসহ নির্মাণ সামগ্রী পরিবহনকারী ট্রাক বা গাড়ি যাতে ঢেকে মালামাল পরিবহন করে তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে পরিত্যক্ত বর্জ্য না পোড়ানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, পরিবেশ অধিদফতর বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করবে। এ লক্ষ্যে পুনরায় আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা আহ্বান করা হবে। সবার সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই আমরা ঢাকা শহরকে বায়ু ও শব্দ দূষণ মুক্ত করতে পারব।
সভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সভার শুরুতে শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা সিটিতে বায়ু দূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। মূলত তিন কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে বায়ু দূষণের মাত্রা বাড়ছে। সেগুলো হলো- ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছ নির্মাণকাজ।