অনলাইন ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: আজ পঁচিশে বৈশাখ, ১৫৮ বছর আগে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের এই দিনে জন্মেছিলেন বাংলা সাহিত্যের অনন্যপ্রতিভা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
কলকাতায় জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ক্ষণজন্মা এই কবি তার লেখনীতে বাংলা সাহিত্যের সব কটি ধারা পরিপুষ্ট করেন।
তার বাবা ছিলেন ব্রাহ্ম ধর্মগুরু দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা সারদাসুন্দরী দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন মা-বাবার চতুর্দশ সন্তান। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার ছিল ব্রাহ্ম আদিধর্ম মতবাদের প্রবক্তা।
মূলত সার্থক বাংলা ছোটগল্পের সূত্রপাত রবীন্দ্রনাথের হাতেই। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও বিহারীলালের লেখনীর মাধ্যমে বাংলা কবিতায় আধুনিকতার সূচনা হলেও রবীন্দ্রনাথের হাতেই তা পূর্ণতা পায়। একইভাবে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে জন্ম নেয়া বাংলা গদ্যকেও তিনি চূড়াস্পর্শী সাফল্য দান করেন।
রবীন্দ্রনাথ ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়।
রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তার জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবরি নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খণ্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এ ছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী তিনিই প্রথম এশীয় ও একমাত্র বাঙালি লেখক। তিনি ভানুসিংহ ঠাকুর ছদ্মনামে লিখতেন।
১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২শে শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বিশ্বকবি।