আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ভারতে জন্ম হয়ে থাকলে বা এই সময়ের আগে যদি কারও বাবা-মা ওই দেশে জন্মগ্রহণ করে থাকেন তাহলে আইন অনুযায়ী তারা উপযুক্ত ভারতীয় নাগরিক এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন মোদি সরকারের এক শীর্ষ কর্মকর্তা।
নাগরিকত্ব আইনের ২০০৪ সালের সংশোধনী অনুসারে, যাদের বাবা মায়ের অন্তত একজন ভারতীয় বা দু’জনেই অবৈধ অভিবাসী না হলে তারাও ভারতীয় নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবেন।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ২০১৯ সালের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ এবং সম্প্রতি এই আইনের বেশ কয়েকটি সংস্করণ সম্পর্কে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার শুরুর পরেই স্পষ্টভাবে এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আনা হয়।
ওই কর্মকর্তা জানান, যারা ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন বা যাদের বাবা-মা এই বছরের আগে এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তারা আইন অনুযায়ী ভারতীয় বলেই বিবেচিত হবেন। আসামের ক্ষেত্রে ভারতীয় নাগরিকত্ব শনাক্তকরণের সময় ছিল ১৯৭১।
সারাদেশে এনআরসি শুরু করার সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে ওই কর্মকর্তা জানান, এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। আমরা জনগণকে বলতে চাই আসামের এনআরসির সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে তুলনা করবেন না। আসামের কাট-অফ তারিখ আলাদা।
নাগরিকত্ব আইন ২০০৪ সংশোধনী অনুসারে, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি বা তার পরে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন কিন্তু ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে জন্মেছেন, যিনি ১ জুলাই ১৯৮৭ বা তার পরে ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন কিন্তু ৩ ডিসেম্বর ২০০৪ সালের আগে জন্মেছেন এবং জন্মের সময় বাবা-মায়ের কেউ একজন ভারতের নাগরিক হলে তারা যথাযথ ভারতীয় নাগরিক বলেই গণ্য হবেন।
১০ ডিসেম্বর ১৯৯২ বা তারপরে কিন্তু ৩ ডিসেম্বর ২০০৪ এর আগে যারা ভারতের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং যার বাবা-মা জন্মসূত্রে ভারতের নাগরিক তারাও ভারতীয় বলেই গণ্য হবেন।
কেউ যদি ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বর বা তার পরে ভারতে জন্মগ্রহণ করেন এবং বাবা-মা উভয়ই যদি ভারতের নাগরিক হন বা বাবা-মায়ের কেউ একজন ভারতের নাগরিক এবং অন্যজন তার জন্মের সময়ে অবৈধ অভিবাসী না হন তবে তারা ভারতীয় নাগরিক।
গত সপ্তাহেই সংসদে বিতর্কিত এই আইন পাস করার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আসামে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের গুলিতে কমপক্ষে তিনজন, বেঙ্গালুরুতে আরও দু’জন এবং লক্ষ্ণৌওতে একজন নিহত হয়েছেন।
নাগরিকত্ব আইনের পাশাপাশি সারাদেশে প্রস্তাবিত এনআরসির বিরুদ্ধেও শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন অনুসারে, হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি এবং খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যরা যারা ধর্মীয় নিপীড়নের কারণে পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ পর্যন্ত এদেশে এসেছেন তাদের অবৈধ অভিবাসী হিসাবে গণ্য করা হবে না এবং তাদেরকে ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।