আন্তজাতিক ডেস্ক, সিটিজেন নিউজ: যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে যে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার অভিযোগে তারা উত্তর কোরিয়ার একটি জাহাজ আটক করেছে।
দেশটির বিচার বিভাগ বলছে, ওই জাহাজটিতে করে কয়লা পরিবহন করা হতো, যা উত্তর কোরিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য। তবে দেশটির কয়লা রপ্তানির ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
বিবিসি বলছে, এই প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করার কারণে উত্তর কোরিয়ার কোনো জাহাজ আটক করলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এই পদক্ষেপ নিয়েছে এমন সময় যখন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে উঠেছে।
এদিকে, এক সপ্তাহের কম ব্যবধানে দ্বিতীয় দফা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে উত্তর কোরিয়া। স্বল্প মাত্রার ওই ক্ষেপণাস্ত্র ৪২০ কিলোমিটার অতিক্রম করতে পারে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর কোরিয়ার মিসাইল টেস্টের সঙ্গে এই জাহাজ আটক ঘটনার কোনো যোগসূত্র নেই।
‘ওয়াইজ অনেস্ট’ নামের ওই জাহাজটিকে ২০১৮ সালের এপ্রিলে প্রথম ইন্দোনেশিয়ায় আটক করা হয়। সে বছর জুলাই মাসে সেটি জব্দ করার আবেদন করে যুক্তরাষ্ট্র। এর পর ইন্দোনেশিয়া জাহাজটিকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়। এখন সেটি যুক্তরাষ্ট্রের পথে রয়েছে।
মার্কিন কৌসুলি জেফরি এস বের্ম্যান বলছেন, ‘আমাদের অফিস জানতে পেরেছে যে, জাহাজের নিবন্ধন গোপন করে উত্তর কোরিয়া উন্নতমানের কয়লা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে।’
‘তারা এর মাধ্যমে শুধু নিষেধাজ্ঞাই লঙ্ঘন করেনি, বরং এই জাহাজের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় ভারী যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বার বার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।’
এই জাহাজের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ মার্কিন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ডলারে দেয়া হতো বলে জানা যাচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে।
পারমাণবিক অস্ত্র ও মিসাইল পরীক্ষার জের ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক অনেক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়েছে উত্তর কোরিয়া।
বর্তমান ঘটনা পর্যালোচনায় ধারণা করা হচ্ছে যে, দুই দেশ আবার চরম বৈরি অবস্থায় ফিরে যাচ্ছে।
তবে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা আবার শুরু করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ায় রয়েছেন উত্তর কোরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি স্টিফেন বিয়েগান।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বশেষ মিসাইল টেস্টের ব্যাপারে কেউই ‘খুশি’ নয়।
প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত বছরের জুন মাসে সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে আরো একটি বৈঠক হলেও কোরিয়ান উপসাগরে পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
গত বছর কোরিয়ান নেতা কিম জং উন বলেছিলেন, তিনি পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করে দিতে পারেন এবং আন্তঃমহাদেশীয় অস্ত্র পরীক্ষা করবেন না, তবে সেসব কর্মসূচি বন্ধ হয়নি। কারণ উত্তর কোরিয়া কর্মসূচি বন্ধের শর্ত হিসেবে দেশটির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি করেছিল।