নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে ঢাকাবাসীর জন্য হেল্পলাইন চালু করব। হেল্পলাইনে ঢাকাবাসী যে কোনো অভিযোগ দিতে পারবেন। এতে সমস্যার সমাধান না হলে ঢাকাবাসী সরাসরি মেয়রকে অভিযোগ জানানোর সুযোগ পাবেন। মেয়র সঙ্গে সঙ্গেই সেই সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ৭ম দিনের মতো নির্বাচনী প্রচারণায় রাজধানীর আজিমপুর-নিউমার্কেট এলাকার বিজিবি ৩ নম্বর গেটের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এমন প্রতিশ্রুতির কথা জানান।
শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমি নির্বাচিত হলে মেয়র হিসেবে নয়, একজন সেবক হিসেবে ঢাকাবাসীর জন্য কাজ করে যাব। সেখানে একজন সেবক হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ২৪ ঘণ্টা ঢাকাবাসীর সেবা করব। ঢাকাবাসী আমাকে তাদের কাছে ২৪ ঘণ্টাই পাবেন। আমরা আমাদের সেবা সার্বক্ষণিক ঢাকাবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছাব।
তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন একটি সেবা প্রদানকারী সংস্থা। সুতরাং সেই সেবা প্রদানকারী সংস্থাকে ঢাকাবাসীর জন্য ২৪ ঘণ্টাই সেবা প্রদান করার জন্য আমরা নিয়োজিত রাখব।
এ সময় ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা এবং উন্নত ঢাকা- এই পাঁচ লক্ষ্যের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন নৌকার প্রার্থী তাপস। তিনি বলেন, ঢাকা নগরীকে আমরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে বাসযোগ্য সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলব। রাস্তায় আবর্জনা থাকবে না। মশক নিধন, সবুজায়ন এ সব আমরা দৈনন্দিন ভিত্তিতে করব। ২৪ ঘণ্টা সিটি কর্পোরেশন এই কাজে নিয়োজিত থাকবে। আমাদের প্রাণের ঐতিহ্যের ঢাকা থাকবে একটি গর্বের জায়গায়।
পুরান ঢাকার সমস্যা নিয়ে আগে কেউ কোনো পরিকল্পনা নেয়নি উল্লেখ করে এই বিষয়ে বিস্তর পরিকল্পনা আছে বলে জানান শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, আমাদের প্রথম পরিকল্পনাই হয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে নিয়ে, এখানে জলাবদ্ধতা নিরসন থেকে শুরু করে ব্যাপক কার্যক্রম আমরা হাতে নিব। আমাদের যে মহাপরিকল্পনা সেই পরিকল্পনার আওতায় ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে সচল করে তুলব। নগরবাসী বাসযোগ্য সুন্দর নগরী পাবেন।
তাপস বলেন, দায়িত্ব পেলে প্রথম ৯০ দিনে অগ্রাধিকার দিয়ে সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্রাশ প্রোগ্রামের আওতায় ব্যাপকভাবে কাজ শুরু করে মৌলিক নাগরিক সুবিধাগুলো নগরবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দেব।
তিনি বলেন, নৌকা মার্কার উন্নয়নের রূপরেখা ঢাকাবাসী সাদরে গ্রহণ করেছে। এর আগে কখনও ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে নিয়ে কোনো পরিকল্পনা করা হয়নি। আমরাই প্রথম এটা করেছি। আমাদের পরিকল্পনার প্রথমেই রয়েছে ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা এবং ঐতিহ্যের যে স্বকীয়তা অপরূপ রয়েছে, সেটাকে প্রস্ফূটিত করা। আমরা যে মহাপরিকল্পনা নেব সেখানে ঐতিহ্যবাহী ঢাকাকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা সেভাবে কাজ করতে চাই। যে ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে তা কীভাবে পুনরুদ্ধার, পুরজ্জীবিত করতে পারি এবং বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে পারি সেটাই মূল লক্ষ্য থাকবে।
এ সময় আচরণবিধি মেনে সুশৃঙ্খলভাবে প্রচারণা চালাতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগ মনোনীত এই মেয়র প্রার্থী।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজি, উপদেষ্টা মুকুল বোস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীরসহ দল ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এরপর বিকালে ঐতিহ্যবাহী লালবাগ এলাকায় গণসংযোগ করেন তাপস। এর আগে ইরাকি মাঠ ও ললিতমোহন দাস লেনে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নৌকার প্রচারণা করেন তিনি।
এ দিকে দিনব্যাপী প্রচার-প্রচারণায় হাজার হাজার দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চান। মিছিলরত নেতাকর্মীরা ‘নৌকা, নৌকা ও তাপস ভাই, তাপস ভাই’- স্লোগানে গণসংযোগ এলাকা মুখরিত করে রাখেন। বেশ কয়েক স্থানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভোট চাওয়ার পাশাপাশি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। তাপস মেয়র নির্বাচিত হলে আধুনিক ঢাকা গড়ার কথাও বলেন অনেকে।