জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিশুদের বিষয়ে খেয়াল রেখে তাদের শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘লিডারশিপ ওরিয়েন্টশন’ কার্যক্রমের সময় মোবাইল ফোনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এ নির্দেশনা দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিসণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান নিজের ফোন লাউড স্পিকারে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উপস্থিত শিক্ষার্থীদের শোনান। এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা এবং ‘লিডারশিপ ওরিয়েন্টশন’ এ অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
আল নাহিয়ান খান জয় জানিয়েছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে ছাত্রলীগ গঠন করেছেন, সেই লক্ষ্য অনুযায়ী ছাত্রলীগকে পথ চলতে হবে। আদর্শ নিয়ে চলতে হবে। মুজিব আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে। ছাত্রলীগের যে সুনাম, সেই সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে প্রতিটি নেতাকর্মীকে সংগঠনের কর্মকাণ্ড চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেসব শিশু বা ছাত্রছাত্রী স্কুল থেকে ছিটকে পড়ছে, তাদের প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সবাই যেন পড়াশোনা করতে পারে, সেজন্য সুযোগ সৃষ্টি করে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর লেখা দুটি বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোচনামচা’ পড়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগের ইতিহাস জানতে হবে। ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে, তাদের সামনে তুলে ধরতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘মানুষ যদি কোনো লক্ষ্য ঠিক রেখে সততার সঙ্গে, দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করে, তাহলে যেকোনো অসাধ্য সাধন করা যায়। মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের প্রতি কর্তব্য আছে। একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এটা কর্তব্য।’
জয় আরো জানান, মুজিববর্ষ উদযাপনের বিষয়েও ছাত্রলীগকে প্রধানমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছেন। ছাত্রলীগ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও জাতির পিতার অনুপস্থিতিতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রলীগকে কীভাবে পরিচালনা করেছেন তা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা। তিনি এও বলেছেন যে, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রলীগের মাধ্যমেই সব তথ্য সংগ্রহ করতেন এবং জেলখানায় তিনি জাতির পিতার কাছে তা পৌঁছে দিতেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় ১০ মিনিট ফোনে কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো তার কথা শোনেন।
‘লিডারশিপ ওরিয়েন্টশনে’ কার্যক্রমের ব্যাকরণ বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং ‘কারাগারের রোজনামচা’। পারস্পরিক সংলাপের মাধ্যমে এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতেই ক্লাস কার্যক্রম শুরু হলো।
অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন। সহযোগিতায় ছিলেন উপ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মো. মেশকাত হোসেন, মো. সোহাগ হোসেন, উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক মো. নেয়ামত উল্লাহ তপন ও আনোয়ার হোসেন জীবন।