নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির জেলাপর্যায়ের শীর্ষনেতারা এখন ঢাকায়। পুরুষের পাশাপাশি নারীনেত্রীরাও রয়েছেন। দল সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন দিবানিশি।
নগরীর যে মহল্লায় বা ওয়ার্ডে যে জেলার লোকদের বসতি বেশি ওই জেলার শীর্ষনেতাদের দেখা যাচ্ছে সেসব এলাকায়। তারা তাদের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন মহানগরীর অলিগলিতে।
নগরবাসীর মন্তব্য, অতীতে এমনটি দেখা যায়নি।
আর ঢাকায় অবস্থানরত নেতারা জানিয়েছেন, ঢাকা সিটি নির্বাচন শুধু মেয়র পদপ্রার্থীকে বিজয়ী করাই নয়, সরকারের প্রতি বার্তা দেওয়া।
দলের তরফ থেকে জানানো বিভিন্ন দাবির প্রতি ঢাকাবাসীর নৈতিক সমর্থন আদায় করা, যা আগামীর বড় কোনো আন্দোলনের রসদ হিসেবে কাজে লাগবে। দলের শীর্ষ নেতার নির্দেশেই তৃণমূলের নেতারা কেন্দ্রে এসেছেন বলে জানান নেতৃবৃন্দ। এসব নেতা দলের নির্বাহী কমিটি ছাড়াও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পদ বহন করছেন।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার দুই (উত্তর-দক্ষিণ) সিটি করপোরেশনে ভোট। প্রচারণা চলছে জোরেশোরে।
মেয়র প্রার্থী থেকে শুরু করে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কর্মী-সমর্থকরা নেমেছেন আগে থেকেই। প্রচারণার কৌশল আর প্রতিরোধের ভাষাটাও এবার ভিন্ন। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচন কমিশন এবং স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দাখিল করছেন।
অন্যদিকে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে এবং ভোট নিশ্চিত করতে জেলাপর্যায়ের শীর্ষনেতাদের আনা হয়েছে রাজধানী ঢাকায়।
বিএনপির তথ্যমতে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বসবাস। কোথাও কোনো জেলার লোকজনের আবার কোনো বিভাগের মানুষের বসবাস বেশি। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে আঞ্চলিক নেতাদের ঢাকায় আনা হয়েছে।
বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে উত্তরের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পূর্বসূরিদের বসতি বৃহত্তর চট্টগ্রামের নোয়াখালী ও ফেনীতে। এই সিটিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের ভোটারদের বসবাসও বেশি। চট্টগ্রাম বিভাগের বাসিন্দা বিশেষ করে ফেনী-নোয়াখালী বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে তাবিথ আউয়ালের প্রচার টিম।
দক্ষিণ সিটি মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেনের পিতা সাবেক মেয়র মরহুম সাদেক হোসেন খোকার পূর্বসুরিরা বৃহত্তর ঢাকা বিভাগের। জেলা মুন্সিগঞ্জ। সাদেক হোসেন খোকা সংসদ নির্বাচনে পরাজিত করেছিলেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
‘ঢাকাইয়াদের পোলা সাদেক হোসেন খোকা’- এই স্লোগান ছিল খোকার। এবার খোকার ছেলে ইশরাক প্রার্থী হয়ে একই প্রচারণা চালাচ্ছেন। ঢাকাইয়াদের দিয়ে প্রচার টিম গঠন করেছে ইশরাকের জন্য। মেয়রদের মতো কাউন্সিলরাও একই পথ অনুসরণ করেছেন।
নির্বাচন পরিচালনার কার্যক্রমের বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন, আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা এখন রাজধানীতে। এসব নেতাকে দুই সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলটির সিনিয়র নেতারা এসব দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকে তদারকি করছেন।
৫৪ ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ঢাকা উত্তর সিটিতে ওয়ার্ডভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন : ওয়ার্ড-১ শাহজাদা মিয়া (ফরিদপুর), ওয়ার্ড-২ ও ৩ অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন (কুষ্টিয়া), ওয়ার্ড-৪ ও ৬ জয়নুল আবদিন ফারুক (নোয়াখালী), ওয়ার্ড-৫ ও ১৬ অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল (বরিশাল), ওয়ার্ড-৭ শাখাওয়াৎ হোসেন বকুল (নরসিংদী), ওয়ার্ড-৮ নজরুল ইসলাম মঞ্জু (খুলনা), ওয়ার্ড-৯ মাহবুবের রহমান শামীম (চট্টগ্রাম), ওয়ার্ড-১০ গোলাম আকবর খন্দকার (চট্টগ্রাম), ওয়ার্ড-১১ নাজিম উদ্দিন আলম (ভোলা), ওয়ার্ড-১২ ও ১৩ ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন (ময়মনসিংহ), ওয়ার্ড-১৪ ও ২৭ আবুল খায়ের ভূঁইয়া (নোয়াখালী), ওয়ার্ড-১৫ মেজর (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, ওয়ার্ড-ওয়ার্ড-১৭ অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান (টাঙ্গাইল), ওয়ার্ড-১৮ মশিউর রহমান (ঝিনাইদাহ), ওয়ার্ড-১৯ মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ (ভোলা), ওয়ার্ড-২০ মিজানুর রহমান মিনু (রাজশাহী), ওয়ার্ড-২১ ও ৩৭ শামসুজ্জামান দুদু (চুয়াডাঙ্গা), ওয়ার্ড-২২ এবিএম মোশাররফ হোসেন (পটুয়াখালী), ওয়ার্ড-২৩ আবুল হোসেন খান (বরিশাল), ওয়ার্ড-২৪ ও ২৫ ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন (নোয়াখালী), ওয়ার্ড-২৬ কামরুজ্জামান রতন (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-২৮ অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন (বরিশাল), ওয়ার্ড-২৯, ৩৩ ও ৩৪ আতাউর রহমান ঢালী (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-৩০ শাহ মো. আবু জাফর (ফরিদপুর), ওয়ার্ড-৩১ ও ৩২ অ্যাডভোকেট মুজিবর রহমান সারোয়ার (বরিশাল), ওয়ার্ড-৩৫ আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী (টাঙ্গাইল), ওয়ার্ড-৩৬ রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু (নাটোর), ওয়ার্ড-৩৮ সেলিম রেজা হাবিব (পাবনা), ওয়ার্ড-৩৯ আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়াম (রাজবাড়ী), ওয়ার্ড-৪০ হেলাল খান (সিলেট), ওয়ার্ড-৪১ ও ৪২ শরীফুল আলম (কিশোরগঞ্জ), ওয়ার্ড-৪৩ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল (রাজশাহী), ওয়ার্ড-৪৪, ৪৫ ও ৪৬ শামা ওবায়েদ (ফরিদপুর), ওয়ার্ড-৪৭ ও ৫০ডা. শাখাওয়াৎ হাসান জীবন (সিলেট), ওয়ার্ড-৪৮ কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন (সুনামগঞ্জ), ওয়ার্ড-৪৯ আব্দুল গফুর ভূঁইয়া (কুমিল্লা), ওয়ার্ড-৫১ ও ৫২ দেওয়ান সালাহউদ্দিন বাবু (সাভার), ওয়ার্ড-৫৩ হুমায়ুন কবির খান (সিরাজগঞ্জ) ও ৫৪ কাজী ছায়েদুল ইসলাম বাবুল (গাজীপুর)।
অন্যদিকে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা জানিয়েছেন, বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণ সিটির জন্য সূত্রাপুর, শাহজাহানপুর, ধানমন্ডি জোনে ভাগ করে কিছু নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওয়ার্ড ও জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন : ওয়ার্ড-১ আকরামুল হাসান (নরসিংদী), ওয়ার্ড-২ মাহবুবের রহমান শামীম (চট্টগ্রাম), মশিউর রহমান বিপ্লব ফেনী), ওয়ার্ড-৩ আনোয়ার হোসেন, ওয়ার্ড-৪ হায়দার আলী লেলিন (ভোলা), ওয়ার্ড-৫ ও ৪৪ অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম (ময়মনসিংহ), ওয়ার্ড-৬ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল (রাজশাহী), ওয়ার্ড-৭ এম এ মালেক (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-৮ হাবিবুল ইসলাম হাবিব (সাতক্ষিরা), ওয়ার্ড-৯ ও ১০ শহীদ উল্লাহ তালুকদার (নেত্রকোনা), ওয়ার্ড-১১ রাজিব আহসান (বরিশাল), ওয়ার্ড-১২ কাজী মফিজুর রহমান (ঢাকা), ওয়ার্ড-১৩ অনিন্দ ইসলাম অমিত (যশোর), ওয়ার্ড-১৪ শেখ রবিউল ইসলাম রবি (যশোর), ওয়ার্ড-১৫ সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল (নরসিংদী), ওয়ার্ড-১৬ রাশেদা বেগম হিরা (রাজশাহী), ওয়ার্ড-১৭, ২৫ ও ৩০ খালেদা ইয়াসমিন (মানিকগঞ্জ), ওয়ার্ড-১৮ ও ২০ মো. হারুন অর রশিদ (রাজশাহী), ওয়ার্ড-১৯ ও ৩৭ মীর সরাফত আলী সপু (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-২১ শাম্মী আক্তার (সিলেট), ওয়ার্ড-২২ আব্দুল বারী ড্যানী (নেত্রকোনা), ওয়ার্ড-২৩ ওয়ারেস আলী মামুন (জামালপুর), ওয়ার্ড-২৪ আসাদুল করিম শাহীন (পিরোজপুর), ওয়ার্ড-২৬ মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-২৭ নিলুফার চৌধুরী মনি (জামালপুর), ওয়ার্ড-২৮ নুরজাহান মাহবুব (ঢাকা), ওয়ার্ড-২৯ সাবেরা নাজমুন মুন্নী (যশোর), ওয়ার্ড-৩১ ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু (গাজীপুর), ওয়ার্ড-৩২ লায়লা বেগম (ময়মনসিংহ), ওয়ার্ড-৩৩ ইঞ্জিনিয়ার মো. আশরাফ উদ্দিন বকুল (রায়পুরা), ওয়ার্ড-৩৪ রফিকুল ইসলাম রাসেল (ঢাকা), ওয়ার্ড-৩৫ অ্যাডভোকেট খন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু (মানিকগঞ্জ), ওয়ার্ড-৩৬ অপর্ণা রায় দাস (কেরানীগঞ্জ), ওয়ার্ড-৩৮ কামরুজ্জামান রতন (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-৩৯ কামরুজ্জামান ইয়াহিয়া খান মজলিস (সিলেট), ওয়ার্ড-৪০ তমিজ উদ্দিন (সাভার), ওয়ার্ড-৪১ মোস্তাফিজুর রহমান দিপু (নরসিংদী), ওয়ার্ড-৪২ জাকির হোসেন ভূঁইয়া (বরিশাল), ওয়ার্ড-৪৩ সিরাজুল হক (জামালপুর), ওয়ার্ড-৪৫ ফাহিমা নাসরিন মুন্নী (ঢাকা), ওয়ার্ড-৪৬ তকদির হোসেন জসিম (ব্রাহ্মনবাড়ীয়), ওয়ার্ড-৪৭ গৌতম চক্রবর্তী (টাঙ্গাইল), ওয়ার্ড-৫১ মাওলানা শাহ নেছারুল হক (পটুয়াখালী), ওয়ার্ড-৫২ ও৫৪ অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম (ঢাকা), ওয়ার্ড-৫৩ আ ক ম মোজাম্মেল হক (মুন্সিগঞ্জ), ওয়ার্ড-৫৫ মাসুদ অরুণ (মেহেরপুর), ওয়ার্ড-৫৬ আবু বক্কর সিদ্দিক (ঢাকা), ওয়ার্ড-৫৭ দেবাশীষ রায় মধু, ওয়ার্ড-৫৮ নাজিম উদ্দিন মাস্টার (ঢাকা), ওয়ার্ড-৫৯ কাজী রফিকুল ইসলাম (বরিশাল), ওয়ার্ড-৬০ অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন (না.গঞ্জ), ওয়ার্ড-৬১ শেখ মো. শামীম ও ওয়ার্ড-৬২ এ টি এম কামাল (না.গঞ্জ), ওয়ার্ড-৭১ অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া (ঢাকা), ওয়ার্ড-৭২ অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আসাদ (বরিশাল), ওয়ার্ড-৭৩ ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু (যশোর), ওয়ার্ড-৭৪ ও ৭৫ নাজিম উদ্দিন আলম (ভোলা)। ওয়ার্ড-৬৩ থেকে ওয়ার্ড-৭০ পর্যন্ত জোন ভাগ করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
শাহজাহানপুর জোনে রয়েছেন মির্জা আব্বাস, মিজানুর রহমান মিনু, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, আফরোজা আব্বাস, হাবিবুর রশীদ হাবিব ও রফিকুল আলম মজনু।
সূত্রাপুর জোনে রয়েছেন আব্দুস সালাম, নিতাই রায় চৌধুরী, আব্দুল হালিম, এ এস এম আব্দুল হাই, কবি আব্দুল হাই শিকদার, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, ডা. শাখাওয়াৎ হোসেন জীবন, কামরুজ্জামান রতন ও কাজী আবুল বাশার। শ্যামপুর জোনে রয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ, শওকত মাহমুদ, জয়নাল আবদীন (ভিপি), রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
ধানমন্ডি জোনে রয়েছেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল মান্নান, আমান উল্লাহ আমান, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ড. সুকোমল বড়ুয়া, আসাদুল হাবিব দুলু, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও হেলেন জেরিন খান।