রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৭ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

পাঁচজন ম্যাজিস্ট্রেট পরিবেশ অধিদফতরে নিয়োগের নির্দেশ

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০২০
  • ২৫৪ বার পঠিত

আদালত প্রতিবেদক: পরিবেশ অধিদফতরের অধীনে কাজ করার জন্য পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আগামী এক মাসের মধ্যে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত। নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে অগ্রগতিসহ আগামী ১০ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

ঢাকার বায়ুর মান নিয়ে করা এক মামলায় আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ক শুনানিতে রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করীম।

গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকার বায়ুর মান ও জনবল বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই নির্দেশ অনুযায়ী আজ আদালতে হাজির হন পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদ। আদালত তার বক্তব্য শোনেন।

শুনানিতে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ঢাকাসহ বড় বড় শহরের সার্বিক বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের সেমিনারের তথ্য ও সুপারিশ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০০২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার বায়ুর মান খারাপ ছিল। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বায়ুর মান আরও বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, উন্নয়ন ও নির্মাণ কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটি ঘটেছে। বায়ু দূষণের উৎস হিসেবে ইটভাটা, যানবাহন, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি, বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন, নির্মাণকাজ, পৌর বর্জ্য, বায়োমাস পোড়ানো, ট্রান্স বাউন্ডারি প্রভাবকে দায়ী করা হয়।

আদালতে পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি বলেন, বায়ু দূষণ নিয়ে আদালতের আদেশ আমাদের অনেক বেশি শক্তিশালী করেছে। এত কিছুর পরেও কেন দূষণ কমছে না- সে বিষয়ে একটি সেমিনার করেছি বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষজ্ঞ শিক্ষকদের নিয়ে। সেখানে তারা কিছু মতামত দিয়েছেন।

সে মতামতগুলো তিনি আদালতে পড়ে শোনান। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতরের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

এদিকে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে গত বছরের ৯ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছিল পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়। কিন্তু এর মধ্যে খুলনার জন্য একজন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করে জনপ্রশাসন। এ তথ্যে আদালতকে অবহিত করার পর এক মাসের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরে ৫ জন ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন আদালত।

পরিবেশ অধিদফতরের জনবল স্বল্পতা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট স্বল্পতার প্রসঙ্গ তুলে মনজিল মোরসেদ শুনানিতে বলেন, অধিদফতরের অর্গানোগ্রাম অনুসারে আটজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা। আছে মাত্র তিনজন। পরিবেশ অধিদফতরের কার্যক্রমকে গতিশীল করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে তিনি আদালতের নিদের্শনার আরজি জানান।

পরে আদালত আদেশ দেন। একই সঙ্গে, বায়ু দূষণরোধে বিশেষজ্ঞ মতামত এবং উচ্চতর কমিটির সুপারিশ নিয়ে একটি সমন্বিত কার্যক্রম তৈরি করে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি আগামী ১০ মার্চের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন।

এর আগে রাজধানীতে বায়ু দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করেন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আবেদন করা হয়।

এর আগে ‘ঢাকার বাতাসে নতুন বিপদ’ শিরোনামে ঢাকার বায়ু দূষণ নিয়ে গণমাধ্যমে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে এ রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৮ জানুয়ারি আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা দেন।

২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর আদালত বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর রাস্তাসহ নির্মাণাধীন জায়গা ঘিরে দেয়া, ধুলামাখা স্থানে দুই বেলা পানি ছিটানো ও দূষণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে নির্দেশ দেন।

এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে দু’বার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীদের নির্দেশ দেয়া হয়। এ আদেশ অনুসারে বিবাদীরা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দিয়েছিলেন। পরে এ নিয়ে দুই সিটির নির্বাহীকে তলবও করেছিলেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এক আদেশে ঢাকা শহর ও আশপাশের এলাকায় বায়ুদূষণের কারণ ও দূষণ কার্যক্রম রোধ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলার অবৈধ ইটভাটা ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন আদালত। এর ধারাবাহিকতায় পরিবেশসচিব ও পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের পক্ষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com