ঢাকা: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল বাতিলের কোনো সুযোগ নেই। তবে আদালত চাইলে করতে পারেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সচিব।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুই সিটির ফল গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে ইসি। তাতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ছাড়া সবার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। অনিয়মের অভিযোগে এই ওয়ার্ডের ফল স্থগিত করেছেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। এদিকে ঢাকার দুই সিটির ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এ বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘নির্বাচন বাতিলের কোনো সুযোগ নাই। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করেছে। তবে আদালত করতে পারে। কেউ যদি চায়, আদালত পর্যন্ত যেতে পারে। পরে আদালত যদি কোনো আদেশ দেন নির্বাচন কমিশনকে, সেটা আমরা দেখব।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএমে যে প্রকৃতপক্ষে ভোট দিয়েছে, ঠিক সেটাই পড়েছে। কারণ এখানে অতিরিক্ত ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। আঙুলের ছাপ ও আইডি কার্ড ছাড়া যেহেতু ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই, ভোটারকে অবশ্যই ফিজিক্যালি যেতে হয়েছে। ভোটার কেন্দ্রে না গেলে ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন তার ভোট অন্যজন দিয়েছে। সেই সঙ্গে কোনো বুথে একশ ভোট থাকলেও একশর বেশি ভোট পড়ার অভিযোগ করেছেন কোনো কোনো কাউন্সিলর।
এর জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘একজন ভোট দিতে যাননি, অথচ তার ভোটটি পড়েছে– এ রকম একটা দেখাক। তাহলে বলা যাবে, ভোটাররা আসেননি, অথচ ভোট পড়েছে। ইভিএম সিস্টেমে ভোটার না আসলে ভোট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। ইভিএমের যে কারিগরি দিক রয়েছে, তাতে এটা সম্ভব না।’
প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে ১ শতাংশ আঙুলের ছাপ শনাক্ত করে ভোটারদের ভোট দিতে সহযোগিতার নিয়ম ছিল এ নির্বাচনে। অভিযোগ রয়েছে, ১ শতাংশের বেশি ভোটার শনাক্ত করেছেন তারা।
এ অভিযোগের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘কমিশনের কাছে এ ধরনের কোনো অনুরোধ আসেনি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছেও এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে করতে পারে, দুইটা-একটা কেন্দ্রে হয়তো করতে পারে। এখানে ভোটার আছে ৪০০, সেখানে ৪ জনের বেশির আঙুলের ছাপ মিলছে না। এ রকম অভিযোগ ১ হাজার কেন্দ্রের মধ্যে একটি কেন্দ্র থেকে এসেছে বলে আমি শুনিনি। রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ১ শতাংশের বেশি অনুরোধ এসেছে কি-না? তারা বলেছেন, আসেনি।’
নির্বাচন আপনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল কি-না জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ বলতে কী বোঝাচ্ছেন জানি না। নির্বাচন করার জন্য যে পরিবেশ থাকা দরকার, তার পরিবেশ একেবারে ৯৯ দশমিক ৯৯ ছিল। বাকি পয়েন্ট জিরো জিরো নিয়ে যদি আপনারা কিছু বলতে পারেন। তবে মারামারির কিছু ঘটনা আমরা পরে শুনেছি। নির্বাচনের পরে শুনেছি যে, একই দলের মধ্যে হয়তো বিদ্রোহী প্রার্থী আছে। তারা হয়তো হাতাহাতি করেছে। একেবারে যে ওখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়া, ওরকম মারামারি কোথাও হয়নি।’