অনলাইন ডেস্ক : এশিয়ার দেশ থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উৎপত্তি হলেও সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইউরোপ-আমেরিকা। বিশ্বে এ পর্যন্ত ৮২ হাজারেরও বেশি মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। আক্রান্ত হয়ে লড়ছে ১৪ লাখ ৩১ হাজারের বেশি। এ ভাইরাসের প্রতিষেধক বিজ্ঞানিরা এখনো আবিষ্কার না করতে পারলেও তারা বলছেন, এ বছরের শেষ নাগাদ ভালো কোনো খবর দিতে পারবেন। তবে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান তাদের আবিষ্কৃত প্রতিষেধক পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করেছেন।
চীন
করোনাভাইরাসের বিষয়ে আলোচনা বা লেখালেখির শুরুতেই আসে চীনের নাম। কারণ প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর দেশটিতে। গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে দেশটির হুবেই প্রদেশের উহান শহরের প্রথম এ ভাইরাসের উৎপত্তি। তবে বিশ্ব যখন এই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে চীন সেখানে পুরোপুরি উল্টো পথে। এ ভাইরাসের বিপক্ষে গত তিন মাসেরও বেশি সময়ের যুদ্ধে দেশটি সফল বলা চলে। চীনে এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এজন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ১১ সপ্তাহ লকডাউনে থাকা উহান শহর। তবে এখনো কিছু কিছু স্থানে আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের সবশেষ তথ্য মতে, বুধবার দেশটিতে নতুন করে ৬২ জন আক্রান্ত হয়েছে, যার ৫৯ জনই বাইরে থেকে আসা। এ পর্যন্ত দেশটিতে ৩ হাজার ৩০০ বেশি লোক মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে ৮২ হাজারের বেশি। আর সুস্থ হয়েছে ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ।
জাপান
দেরিতে হলেও একটু নড়েচড়ে বসেছে জাপান সরকার। দেশটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সম্প্রতি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে চার হাজার ২০০ বেশি আক্রান্ত এবং ৯৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সুস্থ্য হয়েছে ৬২২ জন।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়া করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৩৮৪ জন আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ২০০ জনের। এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার শুরুর দিকে চীনের বাইরে দেশটিতেই বেশি আক্রান্ত ছিল।
ইন্দোনেশিয়া
দেশটিতে করোনার ছোবলে এ পর্যন্ত ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ২৭৩৮ জন। তবে দেশটির জাকার্তা শহরে কর্তৃপক্ষ আগে আরোপ করা সামাজিক বিধিনিষেধের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে। এরই মধ্যে সে দেশের সরকার অর্থনৈতিক গতিশীলতা ধরে রাখতে বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।
ফিলিপাইনস
ফিলিপাইনস সেদেশের জনগণকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলেছে এ মাসের শেষ পর্যন্ত। এদিকে চলতি মাসের শেষ দিকে কম্বোডিয়ার খমের নতুন বছরের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে ১৭৭ জনের মৃত্য ও ৩৭৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছে।
মালয়েশিয়া
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে মালয়েশিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ৬৩ জনের।
ভারত
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ভারতজুড়ে ২১ দিনের লকডাউন চলছে। তবে এ লকডাউনের আরও বাড়ানোর জন্য একাধিক সরকারি ও রাজনৈতিক ব্যক্তি দাবি তুলেছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি আক্রান্তের পাশাপাশি মারা গেছে ১৬০ জন।
বাংলাদেশ
মার্চে ৮ তারিখে বাংলাদেশের প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এ পর্যন্ত ১৬৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। আর মারা গেছে ১৭ জন। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে বেশ কয়েকটি জেলা লকডাউন করা হয়েছে। সবাইর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সচেতন করা হচ্ছে।