নিজস্ব প্রতিবেদক : পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন আম্ফান গত ১২ ঘণ্টায় বঙ্গোপসাগর থেকে চার সমুদ্র বন্দরের দিকে গড়ে ১৮০ কিলোমিটার এগিয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের দিকে ১৭৪ কি.মি., কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরের দিকে ১৬৫, মোংলা বন্দরের দিকে ১৯০ এবং পায়রা বন্দরের দিকে ১৮৫ কি.মি. এগিয়েছে। সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে মোংলা বন্দরের দিকে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মঙ্গলবার (১৯ মে) সকাল ৯টায় আম্ফানের বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ও সোমবার রাত ৯টার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সকল ৯টার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুপার সাইক্লোন ‘আম্ফান’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। সকাল ৯টায় এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৪৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৩০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৭২৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
সোমবার ( ১৮ মে) রাত ৯টার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, সুপার সাইক্লোন আম্ফান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২০ কি.মি.দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯২০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯১০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
আবহাওয়াবিদ মুহম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, আম্ফান উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে মঙ্গলবার (১৯ মে) শেষরাত থেকে বুধবার (২০ মে) বিকেল অথবা সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের ৯০ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২২৫ কি.মি. যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২৪৫ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুপার সাইক্লোন কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৭ (সাত) নম্বর নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ (ছয়) নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলাসমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০-১৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।