নিজস্ব প্রতিবেদক: নিজের সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। রবিবার গণস্বাস্থ্যের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি বাসায় আইসোলেশনে আছেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ঈদেও আমি কারো সঙ্গে দেখা সাক্ষাত করিনি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।
গণস্বাস্থ্যের করোনা কিট প্রকল্প সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার জানান, কিডনিজনিত সমস্যায় সপ্তাহে তিনবার করে ডায়ালিসিস করা লাগলেও করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় ডা. জাফরউল্লাহর গতকাল সোমবার ডায়ালিসিস করা হয়নি।
খ্যাতিমান চিকিৎসক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক স্বাস্থ্য বিষয়ক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮২ সালে প্রবর্তিত বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঔষধ নীতি’ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এফআরসিএসের চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে লন্ডন থেকে ভারতে ফিরে এসে যুদ্ধে অংশ নেন। আগরতলার মেলাঘরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন এবং এরপরে ডা. এম এ মবিনের সাথে মিলে সেখানেই ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেন। তিনি স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক নারীকে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতেন এবং তাদের দিয়ে রোগীদের সেবা করতেন। তার এই অভূতপূর্ব সেবাপদ্ধতি পরে বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল পেপার ল্যানসেট-এ প্রকাশিত হয়।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এছাড়াও ফিলিপাইন থেকে রেমন ম্যাগসাইসাই (১৯৮৫) এবং সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসাবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড (১৯৯২), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ (২০০২) এবং মানবতার সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন।
বর্তমানে তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।