অনলাইন ডেস্ক: ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক মো. সাহেদকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর আগে তাকে বিকালে ডিবিতে হস্তান্তর করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাচ্চু মিয়া সাংবাদিকদের জানান, বুধবার বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে সাহেদকে ঢামেকে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। পরীক্ষা শেষে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসা শেষে আবার ডিবিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, সাহেদকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাকে আবার ডিবিতে নিয়ে যাওয়া হয়।
রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান সাহেদকে সংবাদ সম্মেলনের পর বিকেলে র্যাব ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
তার আগে র্যাব সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমসহ প্রতিষ্ঠানের ১৬ জনের বিরুদ্ধে র্যাব বাদী হয়ে যে মামলাটি দায়ের করেছিল, সেটি বর্তমানে ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা গ্রেপ্তার সাহেদ করিমকে সেখানেই হস্তান্তর করব।’
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সাহেদের নামে প্রায় ৫৯টি মামলা রয়েছে। এ থেকেই তিনি কতটা প্রতারক সেটি বুঝতে পারছেন। কোনো জায়গায় স্থিরভাবে তিনি থাকেননি। রাজধানী থেকে বের হয়েছেন, আবার রাজধানীতে ঢুকেছেন আবার বের হয়েছেন। আমরাও তাকে প্রথম থেকেই সেভাবেই অনুসরণ করছিলাম। একপর্যায়ে তাকে ধরতে সক্ষম হই। গত ৬ জুলাইয়ের পর থেকে সাহেদ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্নভাবে চলাফেরা করতেন। কখনো গণপরিবহনে, কখনো ব্যক্তিগত গাড়িতে, কখনো ট্রাকে চড়ে আবার কখনো হেঁটে চলাফেরা করেছেন।’
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোর ৫টা ২০ মিনিটে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদীর তীর সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান সাহেদকে গ্রেফতার করে র্যাব।
কোমরপুর সীমান্ত দিয়ে নৌকায় করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি জিন্সের প্যান্ট ও নীল রঙের শার্টের ওপর কালো রঙের বোরকা পরে ছিলেন। সাহেদ গ্রেফতার এড়াতে গোঁফ কেটে ফেলেছিলেন, সাদা চুল কালো করেছিলেন। গ্রেফতারের পর সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে সাহেদকে ঢাকায় আনা হয়। এরপর উত্তরায় তাকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান শেষে রিজেন্ট সাহেদের আটকের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব। এ সময় সাহেদের বিরুদ্ধে প্রতারণার কিছু অভিযোগ তুলে ধরেন এবং কীভাবে তাকে ধরা সম্ভব হল সেই বিস্তারিত তথ্য দেন র্যাব ডিজি।
র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, সে (সাহেদ) করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের নামে প্রতারণা করছিল। এখন পর্যন্ত ১০ হাজারের অধিক করোনা পরীক্ষা করে ৬ হাজার ভুয়া রিপোর্ট দিয়েছে সাহেদের প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, বিনামূল্যে পরীক্ষা করার কথা থাকলেও ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা করে নেয়া হতো এবং পুনরায় পরীক্ষার জন্য ১০০০ গ্রহণ করতো। আইসিইউতে ভর্তি করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করতো। একদিকে রোগীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, আরেক দিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিলও জমা দিয়েছে সাহেদের হাসপাতাল রিজেন্ট।