নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভিতরেই ঐক্য নেই। বিভিন্ন কারণে ড. কামাল হোসেনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো। জাতীয় নির্বাচনে পরাজয় এবং আন্দোলনে ব্যর্থতার কারণে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্ব মানতে নারাজ বিএনপি নেতারা। ফলে তাকে মাইনাস করার বিষয়টি প্রায় পাকাপোক্ত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, চুপচাপ থেকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐক্যফ্রন্ট ভুক্ত দলগুলোর পাশাপাশি সরকারবিরোধী বামপন্থী কয়েকটি দলকে নতুন পথ চলায় সম্পৃক্ত করে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। তবে ঐক্য হবে যৌথ নেতৃত্বের সমন্বয়ে। কেননা তারা ড. কামাল হোসেনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের নড়বড়ে অবস্থানের কারণে এক প্রকার নেতৃত্বহীন অবস্থায় নির্বাচন করে বিএনপি। ফলাফলেও আসে ভরাডুবি। এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির সিনিয়র নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ ফ্রন্টের বৈঠকে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
তাদের ভাষ্য, কামাল হোসেনের ভূমিকা এখনো সুবিধাজনক নয়। খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনে তিনি তেমন কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেননি। এছাড়া কামাল হোসেনের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে তৃণমূল নেতাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে হয়েছে বিএনপির হাইকমান্ডকে। তাই সব মিলিয়ে ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে এবং বর্তমান কাঠামো দিয়ে ঐক্যফ্রন্ট চালানো সম্ভব নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐক্যফ্রন্টের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ৮৪ বছর বয়সী ড. কামাল হোসেন এখন শারীরিকভাবে অসুস্থ। তিনি দেশের রাজনীতির জন্য এখন ফিট না এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে কার্যত কোনো ভূমিকাই পালন করতে পারছেন না। সবকিছুতে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। তাই এই জোট বাঁচানোর স্বার্থে তাকে পথ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, ঐক্যফ্রন্টের ভিতরেই ঐক্য নেই। তাছাড়া একাদশ জাতীয় নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী কার্যক্রমে ড. কামাল হোসেনের ওপর আস্থা হারিয়েছেন বিএনপি নেতারা। বিএনপি নেতারা তার নেতৃত্ব মানতে এখন নারাজ। ফলে তাকে মাইনাস করার বিষয়টি প্রায় পাকাপোক্ত। নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় জোট ভাঙার পরিকল্পনা করছে একটি বড় অংশ।