কক্সবাজার প্রতিনিধি: সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ঘটনায় টেকনাফ থানা থেকে প্রত্যাহার ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৭ আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টেকনাফ আদালতের বিচারক মো. হেলাল উদ্দীন। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় দীর্ঘ শুনানির পর তিনি এই আদেশ দেন। এর আগে, বিকাল ৫টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে পুলিশ হেফাজতে ওসি প্রদীপকে কক্সবাজারে আনা হয়। আদালত সূত্রে প্রাথমিকভাবে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওসি প্রদীপ আদালতে আসার আধাঘণ্টা আগে হত্যা মামলার প্রধান আসামি লিয়াকতসহ ৬ জনকে কড়া প্রহরায় একই আদালতে আনা হয়েছে। এর আগে আট আসামি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানা গেছে। আদালতে আনার পর তাদের হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর তাদের আদালতে তোলা হয়।
মামলায় ওসি প্রদীপ ছাড়াও বাকি আসামিরা হলেন বাহারছড়া শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া।
মামলার ৮ নং আসামি এসআই টুটুল ও ৯ নং আসামি কনস্টেবল মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. জাকারিয়া জানিয়েছেন, এই নামে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কোনও পুলিশ সদস্য নেই।
এসময় সরকার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন জেলা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম ও এপিপি অ্যাডভোকেট সাঈদ হোসাইন।
আসামি পক্ষে জামিন আবেদন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোং জাকারিয়া ও অ্যাডভোকেট রাখাল মিত্র।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা রাশেদ খান। এই ঘটনায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন ও নিরাপত্তা বিভাগ। একইভাবে তদন্তের স্বার্থে টেকনাফের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ লিয়াকত আলিসহ ১৬ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বুধবার দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন মেজর সিনহার বড়বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। মামলাটির শুনানিতে সন্তুষ্ট হয়ে তা ‘ট্রিট ফর এফআইআর’ হিসেবে আমলে নিতে টেকনাফ থানাকে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। আদালতের নির্দেশে টেকনাফ থানায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মামলাটি রুজু হয়। দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ও ৩৪ জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নম্বর সিআর: ৯৪/২০২০ইং/টেকনাফ।