আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আরেকটি বিশাল বিক্ষোভের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল বেলারুশে। ২৬ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কো বিতর্কিত নির্বাচনে জেতার দুই সপ্তাহ পর রাজধানী মিনস্কে ফের সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ, তাও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে।
শহরে অবস্থান করা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানিয়েছে, গতকাল রোববার (২৩ আগস্ট) হাজার হাজার পুলিশের উপস্থিতির মধ্যেই স্বাধীনতা চত্বর লোকে লোকারণ্য। বিক্ষোভকারীদের দাবি, লুকাশেঙ্কো নির্বাচন চুরি করেছেন এবং তারা তার পদত্যাগ চায়। অবশ্য ষষ্ঠবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া লুকাশেঙ্কো মনে করছে, এই বিক্ষোভে মদদ দিচ্ছে অজ্ঞাত কোনও বিদেশি শক্তি।
স্বতঃস্ফূর্ত এই বিক্ষোভে বয়স্ক থেকে শুরু করে ছোট বাচ্চারাও অংশ নিয়েছে। তাদের কেউ সঙ্গে এনেছে বিরোধী দলের লাল ও সাদা পতাকা এবং তাদের কণ্ঠে সরকারবিরোধী স্লোগান। বিরোধী দলীয় সমর্থনকারী মিডিয়া বলছে, এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে এক লাখ জনগণ আর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের দাবি ২০ হাজার।
স্বাধীনতা চত্বরে মিলিত হওয়ার পর কিছু বিক্ষোভকারী ‘হিরো সিটি’ ওয়ার মেমোরিয়াল ও প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসের দিকে রওনা দেয়। কিছুক্ষণ পর তারা নিরাপত্তা বেষ্টনীর সম্মুখীন হয় এবং ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে হেলিকপ্টার থেকে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে নামতে দেখা গিয়েছে লুকাশেঙ্কোকে। তিনি একটি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা ছিলেন এবং হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র। তাতে গুলি ভরা ছিল কিনা স্পষ্ট নয়। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, নিজের আগ্রাসী ভাব দেখাতে বন্দুক হাতে নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট। পরে প্যালেসের মূল ফটকের সামনে থাকা নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় তাকে। তাদেরকে ‘থাম্বস আপ’ দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো।
শুধু বেলারুশিয়ান শহরেই নয়, বিরোধী দলীয় নেতা সভেৎলেনা তিখানোভস্কায়াকে আশ্রয় দেওয়া লিথুয়ানিয়াতেও এই বিক্ষোভের হাওয়া লেগেছে। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে প্রেসিডেন্ট গিতানাস নাউসেদাসহ হাজার হাজার মানুষ মানববন্ধন করেছে রাজধানী ভিলনিয়াস থেকে বেলারুশিয়ান সীমান্ত পর্যন্ত। এছাড়া এস্তোনিয়ান রাজধানী তাল্লিন ও চেক প্রজাতন্ত্রে প্রাগেও মানববন্ধনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।