লাইফস্টাইল ডেস্ক: দাম্পত্য জীবনে একবারের জন্যও ঝগড়া হয়নি এমন দম্পতি পৃথিবীর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বলতে গেলে খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। ‘ঝগড়া’ শব্দটি শুনলেই সাধারণত একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয় আমাদের মধ্যে। তবে এই ঝগড়া কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে খুবই ইতিবাচক এবং উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে। তার জন্যে মাথায় রাখতে হবে কিছু বিষয়। ঝগড়া করতে গিয়ে কেবল মেজাজ হারালেই চলবে না।
সুতরাং, চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক কি উপায় মেনে ঝগড়াকে দূর্বিসহ’র বদলে উপভোগ্য করে তোলা যায়-
ঝগড়ার বিষয় ছোট বড় দুরকমই হতে পারে। তাই সঙ্গী ছোটখাটো বিষয় নিয়ে অযথা বাড়াবাড়ি করছে ভেবে তাচ্ছিল্যের ভাব দেখাতে যাবেন না। ভুলেও বলবেন না , ‘এই ছোট বিষয়টি কেন অযথা বাড়াচ্ছ’। কারণ, এই কথা বলার সাথে সাথে ছোট বিষয় অনেক বড় আকার ধারণ করতে পারে। তাই এ ধরনের কথা এড়িয়ে চলুন।
ঝগড়ার সময় অন্য কারো সাথে সঙ্গীকে তুলনা করবেন না। এতে তার আত্মবিশ্বাস নষ্ট হতে পারে। ঝগড়া শেষ হলেও এই কথার রেশ তার মনের মধ্যে থেকে যায়। পরে যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, সেই মানুষটির সঙ্গে যখন সঙ্গীর দেখা হয় তখন সে হীনমন্যতায় ভুগতে পারে। ফলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আপনাদের সম্পর্কের ওপর।
ভুল যারই হোক, সঙ্গীর কাঁধে দোষ চাপিয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করবেন না। এতে আপনার সঙ্গী আরো বেশি রেগে যাবে। দোষ এড়ানোর জন্য সে ঝগড়া চালিয়েই যাবে। আর যদি নিজেও দায় স্বীকার করেন, তবে আপনার সঙ্গী দ্রুতই তার ভুল বুঝতে পেরে আপনার কাছে অনুতপ্ত হবে।
‘ঠিক আছে তুমি জিতেছ, আমি হেরেছি। এবার চুপ করো।’ এভাবে চুপ করতে বললে ঝগড়া আরো দ্বিগুণ গতিতে বাড়বে। কারণ, এ কথা আপনি দোষ স্বীকার করে বলেননি। উল্টো বিরক্ত হয়ে বলেছেন। এটা বোঝার কারণেই সঙ্গীর রাগ কমার বদলে বেড়ে যাবে।
‘আমি ডিভোর্স চাই’! ঝগড়া হলে অনেক দম্পতিই এই কথা বলে। যদিও কথাটা শুধু বলার জন্যই বলা, কিন্তু এর অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে আপনাদের সম্পর্কের ওপর। আর বারবার এই কথা বললে এটা একসময় মনে গেঁথে যায়। এর ফলে এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় খুব একটা আফসোস হয় না।
‘পাগলের মতো কথা বলবে না’- ঝগড়ার সময় এই কথাটা মানুষ প্রায়ই বলে থাকে। অথচ এ ধরণের কথা একদমই বলা উচিত নয়। যেকোনো মানুষকেই পাগল বললে তার রাগ বেড়ে যায়। আর ঝগড়ার সময় এমন কথা বললে আরো দ্বিগুণ হারে রাগ বাড়াটাই স্বাভাবিক। তাই এ ব্যাপারে সাবধান।
এবার জেনে নেওয়া যাক দাম্পত্যকলহের ইতিবাচক দিকগুলো-
যদি ঝগড়া যুক্তিসঙ্গত হয় তবে এতে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বেশিরভাগ দম্পতিই ঝগড়ার পরে একে অপরের কাছে ক্ষমা চায়। এতে তাদের মাঝে ভালোবাসার বন্ধন আরো দৃঢ় হয়।
ঝগড়া ভেতরের জমে থাকা ক্ষোভকে বাইরে বের করে আনে। একপশলা ভারী বর্ষণের পরে যেমন ঝলমলে নির্মল রোদ্দুরের দেখা মেলে তেমনি ঝগড়া শেষে পরস্পরের মনটাও মেঘমুক্ত আকাশের মত ফুরফুরে হয়ে যায়।
বিরোধ বা ঝগড়ার কারণে আপনার ধৈর্য, সঙ্গীর প্রতি যত্ন এবং ভালোবাসা বাড়ায়। একে অপরের ভুলের সঙ্গে মানিয়ে নিতেও সাহায্য করে।
সবশেষে একটা বিষয় কিন্তু খেয়াল রাখবেন। দেখবেন, এ ঝগড়া যেন নিয়মিত না হয়ে যায়। ঝগড়া অবশ্যই করবেন। তবে মাঝে মাঝে, এবং একটু বুঝে শুনে!