ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মো. কাউসারের পক্ষে একাট্টা হয়েছে আওয়ামী লীগ। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা। সেই সঙ্গে, কাউসারকে নির্বাচিত করতে দলের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সব ভেদাভেদ ভুলে একহয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে চরভদ্রাসন পাইলট স্কুল মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
এর আগে নানা অযুহাতে মো. কাউসারকে চরভদ্রাসন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করে সেই চিঠি কেন্দ্রে পাঠিয়েছিল জেলা আওয়ামী লীগ। কিন্তু কেন্দ্র সাফ জানিয়ে দিয়েছে, জেলা কমিটি চাইলেই উপজেলা কমিটির কোনো নেতাকে বহিষ্কার করতে পারে না। তাছাড়া কাউসারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সত্যতা মেলেনি। তাই কাউসারই চরভদ্রাসন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকছেন। উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীকের তিনিই চূড়ান্ত প্রার্থী।
গত বুধবার কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে, দলীয় প্রার্থী কাউসারের পক্ষে সবাইকে একহয়ে কাজ করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরই নৌকা প্রতীকের পক্ষে চরভদ্রাসনে নির্বাচনী জনসভা করল জেলা আওয়ামী লীগ। আগামীকাল শনিবার চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে চরভদ্রাসন পাইলট মাঠে অনুষ্ঠিত কাউসারের নির্বাচনী সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার মোল্লা।
মো. কাউসার আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যার অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর কাজী জাফরউল্যাকে ছেড়ে ফরিদপুর-৪ আসনের তরুণ ও জনপ্রিয় সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর হাতে স্বর্ণের নৌকা তুলে দিয়ে তার সঙ্গে যোগ দেন কাউসার। অভিযোগ রয়েছে, ওই ঘটনার পর কাজী জাফরউল্যা নানাভাবে কাউসারকে দল থেকে বহিষ্কারসহ নানাভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কাউসারের পক্ষে আনা কোনো অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি কাউসারকেই ফের স্বীকৃতি দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মো. কাউসারকে চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়।
গত বছর ২৩ অক্টোবর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মুসার মৃত্যুর কারণে উপজেলা চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হয়ে যায়। গত ২৯ মার্চ এ উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। করোনার কারণে তা পিছিয়ে ১০ অক্টোবর ভোট গ্রহণের দিন ঠিক করা হয়।
প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৪ আসনে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে পরপর দুবার নৌকার প্রার্থী কাজী জাফরউল্যাকে পরাজিত করে বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী। স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয়তাতেও তিনি বিকল্পহীন হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়েই তিনি পথ চলেন।