আদালত প্রতিবেদক: হত্যার পর দীলিপকে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন ওই ঘটনায় আটক জীবন চক্রবর্তী। অথচ সেই দীলিপকে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় বিস্মিত আদালতের প্রশ্ন- চট্টগ্রামের হালিশহরে তাহলে খুনের পর পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে কাকে? এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ওই মামলার আসামি দুর্জয় আচার্যকে জামিন দিয়েছেন আদালত। ফেরত আসা দিলীপ, দুই আসামি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্য শোনার পর এ আদেশ দেয়া হয়।
আসামি দুর্জয় আচার্যের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন জাহিদুল আলম চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গত বছরের ২৩ এপ্রিল পুলিশ বাদী হয়ে হালিশহর থানায় একটি হত্যা মামলা করে। এ ঘটনায় ২৫ এপ্রিল জীবন চক্রবর্তী ও দুর্জয় আচার্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের মধ্যে জীবন চক্রবর্তী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। গাঁজা খাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিলীপ রায় নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার কথা জবানবন্দিতে জানান জীবন চক্রবর্তী। কিন্তু এর কিছুদিন পর দিলীপ রায়কে জীবিত অবস্থায় আদালতের সামনে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট দিলীপকে নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেন এবং পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।
পরে দুর্জয় চক্রবর্তী হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট ফিরে আসা দিলীপ, নথিসহ তদন্ত কর্মকর্তা ও দুই আসামিকে হাজিরের নির্দেশ দেন। সে অনুসারে দুই আসামি জীবন চক্রবর্তী ও দুর্জয় আচার্যকে বৃহস্পতিবার হাজির করে কারা কর্তৃপক্ষ। হাজির হন দিলীপও। নথি নিয়ে আসেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পী সাংবাদিকদের বলেন, দু’জন আসামি- ভিকটিম দিলীপ এবং তদন্ত কর্মকর্তা কোর্টে এসেছিলেন। আদালত তাদের বক্তব্য শুনেছেন।
আসামিরা এক পর্যায়ে আদালতকে বলেন, তাদের অনেক আগে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের (আদালতে) প্রডিউস করার তিন-চার দিন আগে পুলিশ তাদের ধরেছে। টর্চার করে নাকি এ জিনিসটা (স্বীকারোক্তি) করা হয়েছে। সবকিছু শুনে আসামি আচার্যকে জামিন দিয়েছেন আদালত। পুরো বিষয়টা ইনকোয়ারি করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য চট্টগ্রামের সিএমএমকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।