ক্রীড়া ডেস্ক: ১০ ওভারে ২ উইকেটে ৬৬ রান তুলে ফেলা একটি দল যখন শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে মাত্র ১২৬ রান করে ৭ উইকেটে, আপনি বিস্মিত হন। আরেকটি দল যখন ১৬.১ ওভারে ৪ উইকেটে ১০০ রান করে ১৯.৫ ওভারে ১১৪ রানে অলআউট হয়ে যায়, আপনি হতবাক হয়ে যান। প্রথম দলটি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব, দ্বিতীয় দলটি সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। শনিবার ১৩তম আইপিএলের ৪৩তম ম্যাচ ছোট স্কোরেও বিস্ময়কর ক্রিকেট উপহার দিয়েছে দুবাইতে।
তিনটি করে উইকেট শিকার করে পাঞ্জাবের অসাধারণ জয়ের নায়ক দুই পেসার ক্রিস জর্ডান ও আরশদীপ সিং। বিশেষ করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ জর্ডান। তবে সঙ্গে চাবুকের মতো গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এবং অবিশ্বাস্য ক্যাচিংয়ের বিরাট অবদান ১২ রানের জয়ে ।
হায়দরাবাদের প্লে-অফ স্বপ্ন খানিক ধূসর করে দিয়ে পাঞ্জাব তাদের প্লে-অফ স্বপ্নে খানিক রং চড়ালো এই জয়ে। প্লে-অফের লড়াইটাই জমে উঠলো দারুণ। ১৪টি করে পয়েন্ট হাতে নিয়ে মুম্বাই, দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর পয়েন্ট তালিকার প্রথম তিনটি স্থানে আছে নেট রান রেটের ব্যবধানে। ১২ পয়েন্ট নিয়ে চারে কলকাতা। টানা চতুর্থ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঞ্জাব আছে পাঁচে। মুম্বাই ও ব্যাঙ্গালোর বাদে সবাই অবশ্য একটি বেশি ১১টি করে ম্যাচ খেলেছে। সবার নিচে থাকা দিশেহারা চেন্নাইকে কাল হারিয়ে হয়তো শীর্ষস্থানে বসতে চলেছে কোহলির ব্যাঙ্গালোর।
পুনরুজ্জীবিত পাঞ্জাব ম্যাচ ঘুরিয়েছে ১৭তম ওভারে। শেষ চার ওভার থেকে হায়দরাবাদকে যখন ৭ উইকেটে মাত্র ২৮ রান করতে হবে, পাঞ্জাব অধিনায়ক কেএল রাহুল বল দেন ক্রিস জর্ডানকে। ১৭তম ওভারের প্রথম বলটি ওয়াইড করেন ইংলিশ পেসার। পরের বলেই আউট আগের ম্যাচের নায়ক। তবে এ উইকেটটি প্রকৃতপক্ষে তার না অতিরিক্ত ফিল্ডার সুচিথের, সংশয় জাগে। লং অফ থেকে ডানদিকে দৌড়ে এসে উড়ন্ত এক ক্যাচ নিয়ে সীমানা দড়ির কাছে যেভাবে শরীরের ভারসাম্য রেখেছেন সুচিথ তা অবিশ্বাস্য। ওই ওভারে ১ উইকেটের বিনিময়ে ৮ রান আসে। ২০ রানের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে বিজয় শঙ্কর (২৭ বলে ২৬) উইকেটকিপারকে ক্যাচ দেন আরশদীপের বলে।
শেষ ১২ বলে দরকার ১৭ রান। জর্ডানের করা ১৯তম ওভারের প্রথম দুই বলে দুটি সিঙ্গেল নেন জেসন হোল্ডার ও প্রিয়ম গার্গ। তৃতীয় বলে মানদীপের ক্যাচ হয়ে যান হোল্ডার, চতুর্থ বলে রশিদ খান। ১৯ ওভারে আসে ৩ রান, ২ উইকেট খোয়ায় হায়দরাবাদ। শেষ ৬ বলে ১৪ রান তুলতে গিয়ে শেষ তিন উইকেট খুইয়েছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল। আরশদীপের প্রথম বলে রান পান প্রিয়ম গার্গ, দ্বিতীয় বলে সন্দীপ শর্মার ক্যাচ নেন এম অশ্বিন। তৃতীয় বলে গার্গ ক্যাচ জর্ডানের হাতে, চতুর্থ বলটি ঠেকিয়ে পঞ্চম বলে রান আউট খলিল আহমেদ। ১১৪ রানে অলআউট হায়দরাবাদ!
এর আগে টস হারা পাঞ্জাব প্রথমে ব্যাট করে তিন উইকেট হাতে রেখেও স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারে ১২৬ রান। অথচ কেএল রাহুল ও মনদীপ সিং ওপেনিং জুটিতে তুলেছিলেন ৩৭ রান। ৬৬ রানের মাথায় তিন নম্বরে নামা ক্রিস গেইল হোল্ডারের বলে ওয়ার্নারকে ক্যাচ দেওয়ার পর আসা-যাওয়ার মিছিল হয়েছে। সর্বোচ্চ ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন নিকোলাস পূরাণ। দুটি করে উইকেট নেন রশিদ, হোল্ডার ও সন্দীপ শর্মা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাঞ্জাব: ২০ ওভারে ১২৬/৭ (পূরাণ ৩২*, রাহুল ২৭, গেইল ২০, রশিদ ২/১৪, হোল্ডার ২/২৭, শর্মা ২/২৯) ও হায়দরাবাদ: ১৯.৫ ওভারে ১১৪ (ওয়ার্নার ৩৫, শঙ্কর ২৬, বেয়ারস্টো ১৯, পান্ডে ১৫, জর্ডান ৩/১৭, আরশদীপ ৩/২৩)।