বিনোদন প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট নাট্যজন মমতাজউদদীন আহমদ গুরুতর অসুস্থ। তাকে রাজধানী ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অভিনেতার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। তার শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। বাবার অসুস্থতার খবর শুনে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেছেন ছেলে সেজান মাহমুদ তিতাস।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, মমতাজউদদীনের শারীরিক অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। তাকে দেখার পর গণমাধ্যমকে এমনটাই জানান তার চিকিৎসক ছেলে সেজান মাহমুদ তিতাস। তিনি বলেন, ‘বাবা মোটেও বিপদমুক্ত নন। তার শরীর অক্সিজেন পাচ্ছে না। কার্বন ডাই–অক্সাইড বেরিয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্কে পানি জমে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে অলৌকিক কিছু না ঘটলে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার বেশি রোগীকে টিকিয়ে রাখা যায় না।’
বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন নাট্য ব্যক্তিত্ব মমতাজউদদীন আহমদ। শনিবার তার শারীরিক অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত অ্যাপোলো হাসপাতালে নেয়া হয়। নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে রাখার ব্যবস্থা করেন। এর আগে একাধিকবার লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে এসেছিলেন ৮৪ বছর বয়সী এই প্রবীণ অভিনেতা।
মমতাজউদদীন আহমদের জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৮ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার হাবিবপুর থানার আইহো গ্রামে। রাজশাহী সরকারি কলেজে পড়ার সময়ই তিনি রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়েন। রাজশাহীর তৎকালীন ছাত্রনেতা ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুর সান্নিধ্যে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে দেশের পশ্চিমাঞ্চলে ভাষার দাবিতে আন্দোলন সংগঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। জেলও খেটেছেন একাধিকবার।
কর্মজীবনে মমতাজউদদীন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ও পরে ঢাকা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে অধ্যাপনা করেন। তার লেখা নাটক ‘কী চাহ শঙ্খচিল’ এবং ‘রাজার অনুস্বারের পালা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল। নাট্যচর্চায় অবদানের জন্য ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক দেয়। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমি ও আলাউল সাহিত্য পুরস্কারও।