কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় চলন্ত ট্রেন থেকে ছিটকে পড়া নারীর জ্ঞান এখনো ফেরেনি। ওই নারী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চলন্ত ট্রেনে ছিনতাইকারীর থাবার শিকার নারীর নাম সাবিনা ইয়াসমিন (৩৫)।
সাবিনা ট্রেন থেকে ছিটকে নিচে পড়ে গেলেও তার সঙ্গে থাকা ছয় বছরের শিশুপুত্র মেরাজ ট্রেনেই রয়ে যায়। শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে সাবিনার পরিবারের সদস্যরা এসে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের কাছ থেকে মেরাজকে নিয়ে যান। এই ঘটনায় ভৈরব রেলওয়ে পুলিশ রাতেই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে আটক করে। আটক হওয়া ব্যক্তিরা স্টেশন এলাকায় নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত।
পুলিশ জানায়, রাতেই সাবিনার মাথায় সিটিস্ক্যান হয়েছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি। রাতেই সাবিনার পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে আসেন। সাবিনা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চরনারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী মিলন মিয়া বেঁচে নেই। সাবিনা ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। কর্মস্থলে ফেরার জন্য বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর মহানগর গৌধূলি ট্রেনের যাত্রী হয়েছিলেন। তিনি ট্রেনে উঠেন আখাউড়া থেকেই। রাত পৌনে ৯টার দিকে ভৈরব স্টেশনে ট্রেনটি যাত্রাবিরতি দিয়ে আবার ছেড়ে গেলে ধীরগতিতে ট্রেনটি প্ল্যাটফরম অতিক্রম করে। ওই সময় সাবিনা দুই কামরার সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
ছিনতাইকারীও সাবিনা পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মের সামন্য সামনে এগুনো মাত্র হাতে থাকা ব্যাগটি ছিনিয়ে নিতে টান দেন। এই সময় সাবিনা ট্রেন থেকে নিচে পড়ে যান। সাবিনা নিচে পড়ে যাওয়ার পর তার সন্তান ট্রেনে রয়ে যায়। পরে যাত্রীরা শিশু মেরাজকে বিমানবন্দর পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেন। বিমানবন্দর পুলিশ আবার রাতেই মেরাজকে ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয়। গভীর রাতে শিশুটির খালা তাসলিমা বেগম থানায় এসে মেরাজকে নিয়ে যান।
ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত আমরা ৯ জনকে আটক করতে পেরেছি। তাদের জমানো (পেন্ডিং) মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।