যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতকে নিয়ে গড়া সামরিক জোট কোয়াড এর সঙ্গে বাংলাদেশ জড়ালে চীনের সঙ্গে সম্পর্কে তার কী প্রভাব পড়তে পারে? এ সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
ডয়চে ভেলে: কোয়াডকে কী ধরনের জোট মনে করেন? ওই জোটটিকে কীভাবে দেখছেন
এ কে আবদুল মোমেন: কোয়াডে আমাদের কোনো আমন্ত্রণ নেই। আমন্ত্রণ না থাকার কারণ আমরা জোট নিরপেক্ষ একটি পলিসি ম্যানটেইন করি। ব্যালেন্সড একটা ফরেন পলিসি ম্যানটেইন করি। আমরা কোনো সামরিক চুক্তি বা জোটে নাই।
এটাকে কী সামরিক জোট মনে করেন?
কোনো সামরিক চুক্তিতে আমরা যাবো না। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মঙ্গল। দেশের উন্নয়ন। কেউ যদি আমাদের অবকাঠামো, অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে, তাদের সঙ্গে আমরা যাবো।
চীনা রাষ্ট্রদূতের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে কীভাবে দেখেন?
তারা তাদের বক্তব্য দেবে। নিশ্চয়ই দে আর পেইড বাই দেয়ার ওন গভর্নমেন্ট। তারা তাদের নিজম্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং মত প্রকাশ করবে। ফাইন৷ আমরা এটাকে ওয়েলকাম করি। কিন্তু সিদ্ধান্ত কী হবে সেটা আমরা আমাদের দেশের অবস্থান বিবেচনা করে, জনগণের যাতে ভালো হয়, আমাদের বুদ্ধিতে যেটা ভালো মনে হয়, সেটা আমরা করবো। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে খুব স্বচ্ছ। দেশের মঙ্গলের জন্য যেটা ভালো হবে, সেটা তিনি করবেন।
চীন তো বাংলাদেশের সচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী, উন্নয়ন সহযোগী।
তাদের উদ্বেগের কোনো কারণ থাকতে পারে ?
থাকতে পারে। তবে সেটা আমাদের কাছে ইরেলিভ্যান্ট। চীন যে এখানে বিনিয়োগ করে, তারা যে আমাদের এখানে বিনিয়োগ করে, এটা আমাদের কোনো খয়রাত না। নিজেদের স্বার্থে করে। উই ওয়েলকাম। এখানে বিনিয়োগ করলে উইন উইন। আপনারা জার্মানরাও বিনিয়োগ করতে পারেন। তাহলে আপনারাও লাভবান হবেন। আমাদের এখানে এনার্জি কস্ট ইজ ভেরি লো। এখানে অনেক দক্ষ শ্রমিক আছে। তারা কখনো অভিযোগ করেন না। তাই এখানে বিনিয়োগ করলে রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট হবে। এই এলাকার মধ্যে বাংলাদেশে হাইয়েস্ট রিটার্ন অব ইনভেস্টমেন্ট। আমাদের ডমেস্টিক মার্কেট অনেক বড়। তাই এখানে বিনিয়োগ করা লাভজনক। এটা আমাদেরকে কোনো দয়া নয়। তাদের নিজেদের তাগিদে এখানে আসা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন -এই তিন দেশের সাথেই বাংলাদেশের সুসম্পর্ক। আবার যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সাথে চীনের বৈরিতা আছে।
এই অবস্থায় তিন দেশের সাথে বাংলাদেশের কূটনীতির রসায়নটি কী?
তাদের মধ্যে বৈরিতা থাকতে পারে । এটা নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। তাদের নিজেদের স্বার্থেও তাদের মধ্যে ঝামেলা থাকতে পারে। আমাদের সাথে তাদের কোনো ঝামেলা নেই। তারা আমাদের ফ্রেন্ড। দে আর ভেরি সলিড ফ্রেন্ড। তারা নিজেরা নিজেরা ঝগড়াঝাটি করতে পারে। এটা আমাদের ব্যাপার না।
কোয়াডের ব্যাপারে চীনা দূতের বক্তব্য নিয়ে ভারতও তো বক্তব্য দিয়েছে-
আপনি অন্য দেশ নিয়ে এত চিন্তিত কেন? আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নিই। কে কী বললো ইট ইজ সেকেন্ডারি টু আস। ইউ শ্যুড চেঞ্জ দিস মেন্টালিটি। কে কী বললো এটা ভাবলে আমাদের দেশ স্বাধীন হতো না। অনেক বড় বড় রাষ্ট্র আমাদের পক্ষে ছিল না। ডাজ ইট ম্যাটার? আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করি।