জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ: মুসলিম উম্মাহ ও দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়ে মাহে রমজানের শিক্ষা ও চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শোষণ ও বঞ্চনা মুক্ত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক শুভেচ্ছা বাণীতে তারা এসব কথা বলেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ আনন্দে ভাসছে পুরো দেশ। শ্রমজীবী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী সবাই কমবেশি সামর্থ্য অনুযায়ী ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত। শুধু ঈদ আনন্দ নেই প্রায় ১ কোটি ক্ষুদ্র কৃষকের ঘরে। কেনা হয়নি নতুন জামাকাপড়। ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষক পরিবারে ঈদ আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। প্রতিবছর ঈদুল ফিতরকে ঘিরে চাঙা হয় গ্রামীণ অর্থনীতি। ধানের দাম কম হওয়ার কারণে কৃষকের হাতে টাকা না থাকায় এবার ঈদকেন্দ্রিক গ্রামীণ অর্থনীতিতে চলছে মন্দাভাব। ধান কাটার মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নানান ধরনের মেলা হয়। এবার এসব গ্রামীণ মেলাও বসেনি। ধানের দরপতনের প্রভাব পড়েছে ঈদবাজারেও। ঈদে জমেনি গ্রামীণ বাজারে কেনাকাটা।
তারা বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হলেও বাজারে মূল্য নেই। বাজারে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচের অর্ধেকই উঠছে না। প্রতি বিঘা জমিতে ধান চাষ করে সাড়ে ছয় হাজার টাকা লোকসান গুনছেন কৃষক। এর মধ্যেই অনেক কৃষক পানির দামে ধান বেচে মহাজনের ঋণ পরিশোধ করেছেন। অনেকেই ঋণ পরিশোধ করতে গরু-ছাগল বিক্রি করছেন। ফলে দেশের সবাই পরিপূর্ণ ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারছে না। যার দায় শাসকগোষ্ঠী কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, কৃষকের ঈদ আনন্দময় করতে সবার এগিয়ে আসা উচিত। সরকার ধান-চাল সংরক্ষণের সক্ষমতা না বাড়ালে কৃষকের ন্যায্যমূল্য, দুর্যোগ মোকাবেলা ও বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এবার কৃষকের সর্বনাশের জন্য ৬০ লাখ টন চাল আমদানি দায়ী। এখন মৌসুমে মিলাররা পাইকারদের মাধ্যমে ধান কিনছেন না। ব্যাংকে তারল্য সংকট। সবকিছু মিলিয়ে কৃষকরা এমন বিপদে পড়েছেন। কৃষকরা এখন ধানের আবাদ বাদ দিয়ে উচ্চমূল্যের ফসলের দিকে ঝুঁকে পড়ছেন। কৃষকদের ধান চাষে রাখতে হলে ভর্তুকিসহ এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
তারা আরও বলেন, বছর ঘুরে আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছে মহামহিমান্বিত ও বরকতপূর্ণ পবিত্র ‘ঈদুল ফিতর’। ঈদ মুসলিমদের জীবনে নিয়ে আসে অনাবিল আনন্দ। আমাদের জাতীয় জীবনেও ঈদুল ফিতরের গুরুত্ব অপরিসীম। দীর্ঘ একমাস সিয়াম ও কিয়াম সাধনার পর ঈদ উৎসব মুসলিম উম্মাহর প্রতি মহান রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে এক মহানিয়ামত। ঈদের অনাবিল আনন্দে মুসলিম উম্মাহ শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত শান্তির সমাজ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করে। তাই ঈদুল ফিতরের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম।
নেতৃদ্বয় বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভক্ষণে উদ্বাস্তু রোহিঙ্গা মুসলিমসহ ফিলিস্তিন, উইঘুর, কাশ্মির, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের লক্ষ কোটি মজলুম নারী-পুরুষ ও শিশু আজ অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে। এসব মজলুমানের মুক্তির জন্যে বিশ্ব মুসলিমকে মতভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
শুভেচ্ছা বাণীতে তারা বাংলাদেশের জনগণ ও মুসলিম উম্মাহসহ বিশ্ববাসীর শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।