নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ মামার বাড়ির কোনো আবদার নয়, চাইলেই কাউকে নিয়োগ দেয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সচিব ড. এ টি এম মাহবুব-উল করিম। বুধবার তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির নিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এমন কথা বলেন।
সচিব মাহবুব-উল করিম বলেন, রিটকারীদের আইনজীবীরা বলছেন, মানবিক জায়গা থেকে আড়াই হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দিতে হবে। এটাতো কোনো মামার বাড়ির আবদার নয় যে, চাইলেই কাউকে নিয়োগ দিয়ে দেয়া হবে। এখানে মেধার জায়গা। যারা মেধায় এগিয়ে থাকবেন তারাই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাবেন।
তিনি বলেন, এর আগে দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে আমরা শতভাগ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছি। এখন কেউ একজন পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘকাল পরে ৪০-৫০ বছর বয়সে এসে ৪০-৪৫ মার্ক নিয়ে রিট করলেই তাদেরকেই কেন চাকরি দিয়ে দিতে হবে? বিষয়টি মেধার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমরা মেধাবী শিক্ষক চাই। এখন আমরা যদি এ রিটকারীদের নিয়োগ দিয়ে দিই এটা হবে মেধাবীদের সঙ্গে প্রহসন। এখন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে গেছে। আমাদের আইনজীবী সেখানে টু দ্য পয়েন্টে আরো স্ট্রংলি কথা বলতে পারবেন। আশা করছি আদালত আমাদের দাবি মেনে প্রকৃত মেধাবীদের নিয়োগের সুযোগ করে দেবেন।
চাকরি প্রার্থীদের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের কষ্ট আমরা বুঝি। কিন্তু বর্তমানে যারা এ পরিস্থিতিটা তৈরি করে রেখেছে তাদের নিয়োগ প্রার্থীদেরও কষ্ট করতে হচ্ছে।
নিয়োগের এ দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিয়োগ প্রার্থীরা। তারা বলছেন, এটা পরিষ্কার যে, তিন ধাপে আমাদের পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত ফলাফল দিয়েছে এনটিআরসিএ, চূড়ান্ত সুপারিশও করবে এনটিআরসিএ। কোর্ট কি বললো না বললো সেটা আমাদের জানার দরকার নেই। আমরা তো কোনো মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত না।
এ বিষয়ে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিপ্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি শান্ত আহমেদ বলেন, পরিস্থিতি দেখে যা মনে হচ্ছে তাতে নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি না দিয়ে সকলকে মামলা করার নির্দেশনা দেয়াই উচিত ছিল। আমরা পরিষ্কার একটা কথা বলতে চাই আমাদের পরীক্ষা নিয়েছে, চূড়ান্ত ফলাফল দিয়েছে এনটিআরসিএ, চূড়ান্ত সুপারিশও করবে এনটিআরসিএ। কোর্ট কি বললো না বললো সেটা আমাদের জানার দরকার নেই। আমরা তো কোনো মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত না।
তিনি বলেন, আমরা আবেদন করেছি, এনটিআরসিএ মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেবে। তাই আর কোনো কালক্ষেপণ নয় দ্রুত ফলাফল চাই, দিতে হবে। উচ্চ শিক্ষিত এসব মেধাবী বেকারদের মেধা ও ঘাম আর অশ্রু ভেজা আবেদনের টাকার কি কোনো মূল্য নেই এই দেশে? প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমাদের রাজপথে নামতে বাধ্য করবেন না।
এদিকে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়েছে। আড়াই হাজার শিক্ষকের রিটের বিপরীতে সহকারী আপিল করেছে। কিন্তু আপিলের শুনানি আগামী ২৭ জুন নির্ধারণ করেছে চেম্বার কোর্ট। আগামী রোববার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে এটির শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।