নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি আজিম উদ্দন আহমেদ ও এমএ কাসেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে অভিযোগ দায়ের করেছেন মানবাধিকারকর্মী প্রটেকশন ফর লিগ্যাল এন্ড হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস। ১৩ জুলাই মঙ্গলবার রাজধানীর রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন সুফী সাগর সামস নিজেই। তিনি জানান দেশের স্বার্থে রাষ্ট্রের স্বার্থে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানে এমন লাগামহীন দুর্নীতি ও বিশ্ববিদ্যালয়টিকে জঙ্গি তৈরির কারখানায় রূপায়িত করা দুই ট্রাস্ট্রি আজিম উদ্দিন ও এম এ কাসেমের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির হাত থেকে প্রতিষ্ঠান ও দেশকে বাঁচানোর দাবি জানানো হয়।
১৯৯২ সালে যাত্রা শুরু করা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হলেও পরিচালনা পর্ষদে দুয়েকজন ব্যক্তির কারনে ডুবতে বসেছে প্রতিষ্ঠানটি। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় (এনএসইউ) পরিচালিত হয় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। এই ট্রাস্টি বোর্ড একটি মানবহিতৈষী, দানশীল, জনহিতকর, অরাজনৈতিক, অলাভজনক ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এমএ কাসেম মানবহিতৈষী ও অবাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানটিকে বেআইনীভাবে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে রূপদান করে শতশত কোটি টাকা বাণিজ্য করছেন এবং সেই টাকা উভয়ে অপযোগসাজেশ করে আত্মসাৎ করেছেন এ ধারা অব্যাহত রেখেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সুফী সাগর সামস নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুই ট্রাস্টির দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন। অবৈধভাবে বেশি টাকায় জমি ক্রয়, নিয়মের তোয়াক্কা না করে সিটিং চার্জ হিসেবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় ট্রাস্টিদের জন্য গাড়ি কেনা, ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া বিভাগ খুলে অতিরিক্ত ছাত্র ভর্তি করে টাকা হাতিয়ে নেয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় বিদেশ ভ্রমণসহ নানা অনিয়মের কথা তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠানের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার তথ্য উপস্থাপন করে এমএ কাসেম ও আজিম উদ্দিনকে দায়ী করা হয়। মূলত তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়েই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় জঙ্গি তৈরির কারখানায় পরিণত হয়েছে। দেশে ঘটে যাওয়া নানা জঙ্গি হামলার ঘটনায় নর্থ সাউথের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রদের জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরা হয়। এ সময় তাদের স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ও ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে দেখার দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড থেকে তাদের অব্যহতি প্রদান করে নতুন পরিচালনা পর্ষদ সাজানোর দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান কিংবা যে কোনো ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদে এ ধরনের দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যেন কোনোভাবেই আর জড়াতে না পারে সেই দাবি তুলে ধরা হয়। মূলত রাষ্ট্রীয় স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্রণোদিত হয়ে মানবাধিকারকর্মী সুফী সাগর শামস গণমাধ্যমের কাছে এসব তুলে ধরেন।
এদিকে দুদকে জমা দেয়া এই চিঠিটির অনুলিপি পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রী, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই), প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউজিসি চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি সুফী সাগর সামস এই বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্র পত্রিকায় ছাপা হওয়া সংবাদের কপি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।