জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ‘সেনা সদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২১’ এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পর্ষদের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতির লক্ষ্যে ছয় দিনব্যাপী (১৫ থেকে ২০ জুলাই) এ পর্ষদের কার্যক্রম শুরু হলো। এ পর্ষদের মাধ্যমে কর্নেল থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল থেকে কর্নেলে পদোন্নতির জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তারা সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে পদোন্নতি পাবেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মুজিববর্ষ উদযাপনের এ মহতী বছরে সেনা সদর নির্বাচনী পর্ষদ বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত যে সোনার বাংলা গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আজ আর স্বপ্ন নয়, বরং একটি বাস্তবতা। দেশ আজ উন্নয়নের সব সূচকে সম্মানজনক অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমান সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক, যুগোপযোগী এবং পেশাদার বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে।’
বর্তমান সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন এবং সশস্ত্র বাহিনীতে নারীর ক্ষমতায়নে গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার একান্ত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল, তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকারের নিবিড় পরিচর্যায় এ বাহিনী আজ দেশে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অত্যন্ত পেশাদার এবং দক্ষ বাহিনী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের যেকোনো দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দেশের সার্বিক অগ্রযাত্রায় সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশেষ ভূমিকা রাখছে।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তাদের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা, আধুনিকতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি যাতে বজায় রাখতে পারে, সে লক্ষ্যে যোগ্য এবং গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করতে উপদেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি পদোন্নতির ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের পেশাগত দক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, আনুগত্য, শৃঙ্খলার মান ও নেতৃত্বের গুণাবলী এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযোগিতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। যোগ্য নেতৃত্বের অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের যেকোনো প্রয়োজনে বরাবরের মতো সব সময় জনগণের পাশে দাঁড়াবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে যে ভূমিকা পালন করছে, তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। এ আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সেনাবাহিনীর পদোন্নতি পর্ষদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরাসরি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা শোনেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শেষাংশে প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথকভাবে মতবিনিময় করেন ও কুশল জিজ্ঞাসা করেন।