নিজস্ব প্রতিবেদক,সিটিজেন নিউজ:পরিবহন খাতে জনস্বার্থ যেন জিম্মি না হয় সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘পরিবহন খাতে জনস্বার্থ যাতে জিম্মি না হয় সে চেষ্টা করছি। এ জন্য জনমত গড়ে তুলতে হবে।’
সোমবার (১০ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সড়কে শৃঙ্খলার অভাব রয়েছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তায় শৃঙ্খলার সঙ্কট রয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা আনতে না পারলে কোনো পরিকল্পনা কাজে আসবে না। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। আশা করছি আমরা পরিকল্পনা অনুযায়ী শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব।’
তিনি বলেন, ‘মালিক-শ্রমিকের অসন্তোষের কারণেই সড়ক ও পরিবহন আইন করা যাচ্ছে না। মালিক-শ্রমিকের প্রতিবাদ বা আন্দোলন বাজে রকমের হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ অনেক অপমানিত হয়েছে। তারা এ অন্দোলনটি চরম জায়গায় নিয়ে গেছে।’
কাদের বলেন, ‘পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের আন্দোলন রাতারাতি ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করা যায় না। এ খাতের সঙ্গে আরও অনেক কিছু সংশ্লিষ্ট রয়েছে। শ্রমিকরা ভিন্নমতের ছিল না। তারা ঐক্যবদ্ধ ছিল। প্রাথমিকভাবে যুক্তিতর্ক দিয়ে সমাধান করতে দেরি হয়ে গেছে। এটা হয়েছে আমার দীর্ঘদিন অনুপস্থিতির কারণে। এখন এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ আইনের সঙ্গে নতুন কোনো কিছু যোগ করা যায় কি না।’
গতবারের তুলনায় এবার ঈদে দুর্ঘটনা কম, কিন্তু মৃত্যুর হার বেশি বলেও জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘গতবারের ঈদের তুলনায় এবার দুর্ঘটনা কম। কিন্তু মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। মূলত ইজিবাইক-সিএনজি অটোরিকশার কারণেই দুর্ঘটনা বেশি হয়। আর এসব দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা সবাই মারা যান। লং রুটে ড্রাইভিং ও রাস্তার পাশে যানবাহন রাখায় দুর্ঘটনা ও দুর্ভোগ বেশি হয়।’
তিনি বলেন, ‘হাইওয়েতে ইজিবাইক-সিএনজি অটোরিকশা বন্ধ করতে হলে আমাদের বিকল্প পথে যেতে হবে। কারণ যারা এসব যানবাহন চালান তারা গরিব মানুষ। আর যারা গাড়িতে চলাচল করে তারা বাধ্য হয়েই করে। কারণ ওইসব স্থানে যানবাহনের সঙ্কটের কারণে এসব যানবাহনেই চলাচল করতে হয়। আমরা এগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। এসব যানবাহন আমরা হাইওয়েতে চলাচল না করার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছি।’
সবকিছু বিবেচনা করেই ইজিবাইক বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সড়ক ও পরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বড় চ্যালেঞ্জ। রাজধানীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ডিটিসিএ, দুই সিটি মেয়রকে নিয়ে খুব শিগগিরই বৈঠকে বসব। সেখানে রাজধানীর সড়ক ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলায় করণীয় বের করা হবে।’
রাজধানীতে রাইড শেয়ারিংয়ে জালিয়াতির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান সেতুমন্ত্রী। রাইড শেয়ারিং নীতিমালা আগামী মাসের মধ্যে করা হবে বলেও জানান তিনি।
কাদের বলেন, ‘এবার রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ছিল। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়াও আদায় করা হয়েছে। এ সব কারণে বিআরটিএ এবার ২৫৫টি মামলা করেছে। এর বিপরীতে ৫ লাখ ২০০ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।’ চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে সন্তোষজনক অবস্থানে যেতে পারিনি বলেও মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী।