নিউজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধের এই আবহে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলা। এমতাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে ভিটামিন ট্যাবলেট, হোমিওপ্যাথিক ওষুধ, এসব অনেকেই খাচ্ছেন। তবে আমাদের রোজকার রান্নাতেই আছে এমন অনেক উপাদান, যারা নিশ্চুপে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লেবু এমন একটি ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় যার বিকল্প নেই।
উপকারিতা
১. লেবু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি-এর উৎস। এই ভিটামিন শরীরকে সুস্থ রাখতে দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে কাজ করে।
২. খাওয়ার আগে লেবুজল খেলে জিভের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া লেবুজল শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ও বিপাক ক্রিয়ার মাত্রা বাড়ায়। ফলে খাওয়ার আগে লেবুজল খাওয়া উপকারী অভ্যাস।
৩. লেবুতে যে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, তা কিডনিতে পাথর জমার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এছাড়া, যাদের কিডনিতে পাথর জমেছে তারাও নিয়মিত লেবুজল খেলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
৪. দিনকাল এমন যে, কারও হাঁচির শব্দ শুনলেও লোকে আঁতকে উঠছে। তার মধ্যে এসে গিয়েছে বর্ষা। এমন অবস্থায় ঘনঘন সর্দি-জ্বরের সমস্যায় যারা ভোগেন তারা কিন্তু নিয়মিত লেবুজল খেলে উপকার পাবেন।
৫. সর্দির সময়ে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন অনেকে। এক গ্লাস পানিতে আধখানা পাতিলেবুর রস গুলে তাতে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন। তারপর একঢোকে খেয়ে নিন। সঙ্গে-সঙ্গে মুক্তি পাবেন নাক বন্ধের সমস্যা থেকে।
৬. যারা ইউরিক অ্যাসিডের কারণে গাঁটের ব্যথায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত লেবুজল খেলে ভীষণ উপকার পাবেন।
৭. মাদকাসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে চান অনেকেই। তারাও নিয়মিত লেবুজল খেলে ওই আসক্তি থেকে অনেকটা রেহাই পাবেন।
৮. লেবুজলের মিশ্রণ শরীরের ব্যাকটেরিয়া মারতে সাহায্য করে। ফলে ওই মিশ্রণ পান করলে ফুড পয়জনিংয়ের মতো পেটের সমস্যার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়।
৯. পাতিলেবু শরীরে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে বৃদ্ধি পায় শরীরের সামগ্রিক কার্যকারিতা।
১০. এসবের পাশাপাশি লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের দাঁত ও হাড়ের গঠনেও সাহায্য করে।
এতসব উপকারিতা সত্ত্বেও কিন্তু সাবধান! লেবু বেশি খেলেও হতে পারে হিতে বিপরীত!
বেশি খাওয়ার অপকারিতা
১. অত্যধিক লেবু খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যায়।
২. মুখের মধ্যে থাকা নরম কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেখান থেকে মুখের মধ্যে ফোড়া বা ফুসকুড়ি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
৩. খালি পেটে লেবু খেলে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক পেপসিন ভেঙে যায়, যে পেপসিন আমাদের হজমে সাহায্য করে।
৪. অতিরিক্ত লেবু খেলে অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়, বারবার বাথরুম পাওয়া, শরীর শুকনো হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা যায়।
৫. অতিরিক্ত সাইট্রিক অ্যাসিড শরীরে আয়রনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এই মাত্রা প্রয়োজনাতিরিক্ত হলে কিন্তু মুশকিল।
৬. সাইট্রাস মাইগ্রেন বাড়ায়। তাই যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে তাঁদের এমনিই লেবু জাতীয় ফল না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।