ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে বিদেশফেরত নিজের ছেলেকে নির্দয়ভাবে পিটিয়ে হত্যা করা সেই পিতা ইসহাক ঢালীকে গ্রেপ্তার করেছে পাগলা থানা পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার কালের কণ্ঠ অনলাইনে ‘প্রবাসে জীবনবাজি রেখে উপার্জিত টাকাই কাল হলো শারফুলের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রসংগত, উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর বড় ছেলে শারফুল ইসলাম সাত-আট বছর লেবাননে থাকা অবস্থায় বাবার নামে প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকা পাঠান। কিন্তু সমুদয় টাকা পরিবারের সদস্যরা আত্মসাৎ করেন। করোনার প্রাদুর্ভাবের পর শারফুল ইসলাম দেশে ফিরে বাবার কাছে পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে শুরু হয় মনোমালিন্য ও বিবাদ। এ নিয়ে মাঝেমধ্যেই শারফুলের সঙ্গে বাবা, মা, ভাই-বোনদের ঝগড়া হতো। কয়েক দিন আগে স্থানীয়ভাবে বিচার-সালিসও হয়েছে। গত বুধবার সকালে আবারও একপর্যায়ে শারফুলকে ঘরের ভেতর আটকে পিতা ইসহাক ঢালী, ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম শাবল ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে মেঝেতে ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রতিবেশীরা এসে ঘরে প্রবেশ করতে চাইলেও তারা বাধা প্রদান করেন। তবে বাধা উপেক্ষা করে তারা মুমূর্ষু অবস্থায় শারফুলকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শারফুল মারা যান। পরে এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোন শেফালী আক্তার বাদী হয়ে পাগলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুজ্জামান বলেন, প্রধান অভিযুক্ত ইসহাক ঢালীকে গত রাত ১টায় মাওনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, নিহত ছেলে শারফুল ইসলাম তাকেসহ পরিবারের সদস্যদের নির্যাতন করত। এতে অতিষ্ঠ হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।