কোনো পণ্য না কিনে শুধু দর্শনার্থী হয়েই পাবেন ২৫ লাখ টাকা পুরস্কার। প্রথমবারের মতো দেশে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো-২০২২ এ এমনই আকর্ষণীয় সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে একজন দর্শনার্থী পাবেন প্রথম পুরস্কার হিসাবে ১০ লাখ টাকা। এ ছাড়া দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে একজন পাবেন ৫ লাখ টাকা।
এর বাইরে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার পাবেন ১০ জন দর্শনার্থী। মেলার আয়োজকরা দর্শনার্থীদের জন্য রেখেছেন এমনই সব আকর্ষণীয় পুরস্কার।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা- আইসিসিবিতে তিন দিনব্যাপী বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো- ২০২২ এর উদ্বোধন করে আয়োজকরা আকর্ষণীয় এ পুরস্কারের ঘোষণা দেন। দেশবরণ্যে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন এই এক্সপোর উদ্বোধন করেন। এ সময় দেশের ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সাবেক ও বর্তমান নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মেলা ১৭, ১৮, ১৯ মার্চ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত দর্শনার্থী ও ক্রেতার জন্য উম্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও বাজুসের কোষাধ্যক্ষ উত্তম বণিক বলেন, মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য আমরা মোট ২৫ লাখ টাকার পুরস্কার রেখেছি। ১২ জনকে র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে এ ২৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রথম পুরস্কার হিসেবে একজন পাবেন ১০ লাখ টাকা। দ্বিতীয় পুরস্কার হিসেবে ৫ লাখ টাকা পাবেন একজন। এ ছাড়া ১ লাখ টাকা করে ১০ জন পাবেন পুরস্কার।
তিনি বলেন, মেলায় প্রবেশের সময় নির্ধারিত কুপন পূরণ করে বক্সে রেখে যাবেন দর্শনার্থীরা। মেলার শেষ দিন এই কুপনগুলো থেকে র্যাফেল ড্র করা হবে। র্যাফেল ড্রয়ের মাধ্যমে ১২ জন সৌভাগ্যবান দর্শনার্থী পাবেন মোট ২৫ লাখ টাকা। তাঁদের কোনো পণ্য কিনতে হবে না। শুধু মেলার দর্শনার্থী হয়েই এই পুরস্কার পাবেন তারা।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো করছে। এটা আমরা স্বপ্নেও কখনো চিন্তা করতে পারিনি। বাজুসের বর্তমান নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। সুতরাং আজকে উদ্বোধন হওয়া এক্সপোতে যে সকল দর্শনার্থী আসবেন তাঁদের জন্য র্যাফেল ড্র এর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। র্যাফেল ড্রয়ের প্রথম বিজয়ী পাবেন ১০ লাখ টাকা। এটি ছাড়াও থাকছে আরো অনেক পুরস্কার।
তিনি বলেন, বাজুসের বর্তমান নেতৃত্ব দেশের স্বর্ণ ব্যবসাকে শিল্পে রূপান্তরিত করে রপ্তানির স্বপ্ন দেখাচ্ছে। স্বর্ণশিল্প হবে আমাদের দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিমুখী বৃহৎ শিল্প।
এক্সপোর উদ্বোধন করে ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘আজকে ঐতিহাসিক দিন। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের জন্মদিন। সুতরাং জুয়েলারি এক্সপো উদ্বোধনের জন্য আজকের মতো শুভ দিন আর হয় না। ‘
তিনি বলেন, ‘যেকোনো ভালো কিছুকে সোনার সঙ্গে তুলনা করা হয়। সোনা এতই মূল্যবান। বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো করবে সেটা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারি নাই। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র বাজুসের বর্তমান কমিটির কারণে। বাজুসের বর্তমান কমিটি যেভাবে কাজ করছে বাংলাদেশের জুয়েলারি পণ্য গার্মেন্টের পরই দ্বিতীয় বৃহৎ রপ্তানি শিল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। ‘
বাজুসের সাবেক সভাপতি ড. দিলীপ কুমার রায় বলেন, ‘বাজুসের বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলার স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা বাজুসের পতাকাতলে এসেছে। এ কমিটি স্বর্ণশিল্পের হারানো গৌরব ফিরিয়ে দিতে কাজ করছে। ‘
তিনি বলেন, ‘এ দেশের স্বর্ণ এবার বিদেশে রপ্তানি হবে। গার্মেন্টের পর এ শিল্প সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় করবে। সরকারকে রাজস্ব দেবে। বিদেশিরা স্বর্ণের জন্য বাংলাদেশে আসবে। এসব অসম্ভবকে সম্ভব করতে বাজুস পরিবারকে বর্তমান কমিটির নেতৃত্বে এক থাকতে হবে। ‘
দেশের স্বর্ণশিল্পীদের হাতে গড়া নিত্যনতুন ডিজাইনের অলংকারের পরিচিতি ঘটাতে ‘বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো ২০২২’ এ দর্শনার্থী ও ক্রেতাসাধারণকে আমন্ত্রণ জানান অন্যান্য বক্তারা।
তারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সহায়ক ভূমিকা রাখতে এই এক্সপোর আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জুয়েলারি এক্সপো-২০২২ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-৪১ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এদিকে বাজুস জানায়, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দুঃসাহসিক এক অভিযাত্রায় সহযাত্রীদের সাথে নিয়ে দেশের অর্থনৈতিক খাতের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যোগ দিতে বাজুস এই প্রথম বাংলাদেশে জুয়েলারি এক্সপো ২০২২ এর আয়োজন করেছে।