বিএনপির চেয়াপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল পাবনা জেলার প্রত্যন্ত চরাঞ্চাল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয় আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্ট-এএএবিএমকেটি (এবি ট্রাস্ট)। ট্রাস্টটি একটি বেসরকারি, অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ২০০৭ সালের ১৩ নভেম্বর ট্রাস্টটি নিবন্ধন করা হয়। এই সময় এতে উন্নত মানসিকতার সমাজকর্মীরাও যুক্ত হন। কয়েকজন সমাজসেবী ১৯৮৮ সাল থেকেই সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সামাজিক ও অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে আসছিলেন। শুরুতে যা শিক্ষা এবং কিছু সামাজিক কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর ২০০১ সাল থেকে কাজের পরিসর আরও বৃদ্ধি পায়, যার ফলশ্রুতিতে এএএবিএমকেটি (এবি ট্রাস্ট) বৃহৎ পরিসরে কাজ শুরু করে। কিছু সামাজিক উন্নয়ন, বিশেষ করে রাস্তাঘাট মেরামত, বৃক্ষরোপণ, সুপেয় পানির জন্য গরীবের বাড়ির আঙ্গিনায় টিউবওয়েল স্থাপন, বন্যার্তদের জন্য আশ্রায়ণ অবকাঠামো নির্মাণ এবং গরিবদের জন্য বাড়ি নির্মাণ, গরিব কর্মহীনদের মাঝে রিকশা-ভ্যান বিতরণ, মসজিদ-মন্দির-গীর্জা ভিত্তিক পাঠাগার চালু প্রভৃতি কাজ এ সময় থেকে ব্যাপকভাবে শুরু হয়।
এএএবিএমকেটি (এবি ট্রাস্ট) এলাকায় লিঙ্গ সমতা, শিক্ষা, শ্রমিকদের কল্যাণ, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর ফলে সমাজের দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষের জীবনযাপনের নিরাপত্তা এবং ক্ষমতায়নের কাজ করা সম্ভব হয়। বর্তমানে ট্রাস্টটি পাবনায় বহুমুখী উন্নয়নমূলক ব্যাপক কর্মসূচি সাফল্যের সাথে বাস্তবায়ন করছে।
আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে বর্তমানে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি কারিগরি ইনস্টিটিউট, একটি কৃষি ডিপ্লোমা ইনস্টিটিউট, একটি ডিগ্রি কলেজ, একটি কওমি মাদ্রাসা, একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান গুলোতে দুই হাজারের অধিক ছাত্রছাত্রী বর্তমানে লেখাপড়া করছে। ট্রাস্টটি কর্মসংস্থানমূখী আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।
আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্টের উদ্দেশ্যে;
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী যাতে অংশ নিতে পারেন সেজন্য তাদের গুণগত মৌলিক শিক্ষা প্রদান করা;
গ্রামাঞ্চলের ও চরাঞ্চলের জনগণের উন্নত স্বাস্থ্য গড়ে তুলতে চিকিৎসাসংক্রান্ত পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান;
পল্লী এলাকার মানুষের জন্য বিশুদ্ধ সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন নিশ্চিত করা;
সামাজিক উন্নয়নে কার্যকর শক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে যুব উন্নয়ন কর্মসূচি প্রণয়ন;
নারীদের উন্নয়নমূলক কাজে অংশগ্রহণ;
সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি গ্রহণ;
সমাজের মানুষের আয় বাড়াতে সহায়ক টেকসই কর্মসূচি প্রণয়ন;
পরিবেশ রক্ষায় স্থায়ী তথা টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ;
যুবকদের স্বাবলম্বী করতে বৃত্তিমূলক ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ প্রদান;
নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশু-কিশোরদের জন্য স্কুলে খাদ্য কর্মসূচি চালু;
আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়তে সমাজের অবহেলিত বিকলঙ্গ অন্ধ, বধির ও পঙ্গুত্ববরণ করা মানুষদের সহায়তা;
সমাজে ক্ষমতায়ন বাড়াতে প্রত্যেকের জন্য ভূমির বন্দোবস্ত করা;
সমাজের সবার জন্য স্থায়ী বাড়ি নির্মাণ; টেকসই ও উন্নত কৃষি প্রযুক্তি চালু;
মাছ ধরার উন্নত প্রযুক্তি এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে পানির মধ্যে গাছপালা উৎপাদন;
সমাজের প্রত্যেকের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠা;
পরিবহণ শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করা এবং সমাজের দরিদ্রদের জন্য জরুরি এবং মানবিক সহায়তা প্রদান।
আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্ট মনে করে, সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতিতে শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজের বঞ্চিত মানুষের দারিদ্র্য নিরসনে এটি বড় অবদান রাখে। সুবিধাবঞ্চিতদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ট্রাস্ট অতীতের বছরগুলোতে নানা ধরনের শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ বি ট্রাস্ট পাবনা শহরের পুরান কুটিপাড়া সংলগ্ন এলাকার গরিব মানুষের সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের উদ্দেশ্যে ২০০১ সালে প্রায় ৫ দশমিক ৫০ একর জায়গা প্রদান করে। উক্ত জমিতে প্রাইমারি স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল, ডিগ্রি কলেজ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও পাঠাগার নির্মাণ করা হয়। এসব শিক্ষা। প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২০০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। এছাড়া ট্রাস্ট পাবনা শহর হতে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার সুবিধার্থে প্রায় ৪০ একর জায়গা দান করে। এ স্থানেও বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে।
আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে নির্মিত মাদ্রাসা, এতিমখানা, হেফজখানা ও মসজিদের বিবরণ; ১. ভবানীপুর জামে মসজিদ। ২. ভগীরতপুর জামে মসজিদ। ৩, হিমায়েতপুর পুর্বপাড়া মসজিদ। ৪. মাধপুর জামে মসজিদ। ৫. খোদাইর পুর জামে মসজিদ। ৬. গাতী আটমাইল জামে মসজিদ। ৭. টেবুনিয়া বারইপারা জামে মসজিদ। ৮. টেবুনিয়া ডিগ্রী কলেজ জামে মসজিদ। ৯. কামার গ্রাম মৎস্যজীবি পাড়া জামে মসজিদ। ১০, ইসলামপুর পুর্বপাড়া জামে মসজিদ। ১১. কুলুনিয়া জামে মসজিদ। ১২. আশুতোষপুর পুর্বপাড়া জামে মসজিদ। ১৩. পশ্চিম বলরামপুর জামে মসজিদ। ১৪. দোপকোলা জামে মসজিদ। ১৫. কোলাদী চারা বটতলা জামে মসজিদ। ১৬. কাছারপুর মাদ্রাসা জামে মসজিদ। ১৭. কাচীপাড়া জামে মসজিদ। ১৮. বাবুলচরা পশ্চিম পাড়া জামে মসজিদ। ১৯. কোলাদী গোরস্থান জামে মসজিদ। ২০. চরতারাপুর গড়ের ভিটা জামে মসজিদ। ২১. দাসপাড়া পূর্বপাড়া জামে মসজিদ। ২২. কাছারপুর পূর্বপাড়া জামে মসজিদ। ২৩. মালঞ্চী গোপীনাথপুর জামে মসজিদ। ২৪. নুরপুর : ক’ গ্রাম জামে মসজিদ। ২৫. ইসলামপুর মোল্লাবাড়ী জামে মসজিদ। ২৬. মহাদেবপুর পূর্বপাড়া জামে মসজিদ। ২৭. গঙ্গারামপুর পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদ। ২৮. আশুতোষপুর জামে মসজিদ। ২৯. ইসলামপুর আলম হাজীর জামে মসজিদ। ৩০. হিমায়েতপুর গোরস্থান জামে মসজিদ। ৩১. কাশীপুর খা পাড়া জামে মসজিদ। ৩২. আফরী জামে মসজিদ। ৩৩. ব্রজনাথপুর জামে মসজিদ। ৩৪. নিয়ামতউল্লাপুর জামে মসজিদ। ৩৫. মাদার গাছী জামে মসজিদ। ৩৬. বয়রা জামে মসজিদ। ৩৭. চাটমোহর ধুলাউড়ি জামে মসজিদ। ৩৮. চাটমোহর গোপালপুর জামে মসজিদ। ৩৯. কাশিপুর বাজার জামে মসজিদ। ৪০. শ্রীরামপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসা। ৪১. ভবানীপুর মাদ্রাসা ভবন। ৪২. ভবানীপুর এতিমখানা ভবন। ৪৩. সুখচর দক্ষিণপাড়া জামে মসজিদ, চরতারাপুর।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আলহাজ আহেদ আলী বিশ্বাস মানবকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে আমি ও আমার পরিবার মানুষের পাশে আছি। আমাদের এ সামাজিক কার্যক্রম প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চলমান থাকবে, ইনশাল্লাহ।