অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত ১৩ মে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারত। তার চারদিন পর ১৭ মে সেই নিষেধাজ্ঞার কিছু শর্ত শিথিলও করা হয়।
এবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক কর্তৃপক্ষ (ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড- ডিজিএফটি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিগগিরই ১০ লাখ টন গম রফতানি করা হবে; তার মধ্যে প্রায় ৬ লাখ টন যাবে বাংলাদেশে। ভারতের একজন গম রফতানিকারক দেশটির দৈনিক পত্রিকা দ্য ইকোনমিক টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই রফতানিকারক বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, ডিজিএফটি ১০ লাখ টনেরও কিছু বেশি গম রফতানির অনুমতি দিয়েছে। তারমধ্যে প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ গম বাংলাদেশে পাঠানো হবে। বৈধ ও যথাযথ ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতেই রফতানি করা হবে এই গম। সড়ক ও রেলপথে যাবে গমের চালান।
তিনি আরো বলেন, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গয়াল ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমানে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে আছেন। তিনি দেশে ফিরে এ বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন।
আন্তর্জাতিক বাজারে গম রফতানিতে শীর্ষ দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন। কিন্তু এ দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় কৃষ্ণ সাগর অঞ্চল থেকে গমের চালান আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই চলছে এই অবস্থা।
গম উৎপাদনে বিশ্বের দেশসমূহের মধ্যে শীর্ষে আছে চীন, তারপরই ভারতের অবস্থান। এ কারণে কৃষ্ণ সাগর থেকে গমের চালান আসা বন্ধ হওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের দিক থেকে ভারতের ওপর চাপ বাড়ছে।
কিন্তু গত মার্চে তীব্র দাবদাহের ফলে চলতি মৌসুমে ভারতে গমের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাশাপাশি, দেশটিতে বিপজ্জনক হারে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। এপ্রিল মাসে এই হার ছিল ৭ দশমিক ৭৯ শতাংশ।
এ পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাধ্য হয়েই ১৩ মে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ১৭ মে শর্তসাপেক্ষে নিষেধাজ্ঞা খানিকটা শিথিল করা হয়।
এ বিষয়ক এক আদেশে ডিজিএফটির পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ১৩ মে অথবা তারও আগে গমের যেসব চালান ভারতের শুল্ক দফতরের কাছে পরীক্ষার জন্য তুলে দেওয়া হয়েছে এবং নথিভুক্ত হয়েছে, সেসব চালান বিদেশে পাঠানো যাবে।
তবে কলকাতাভিত্তিক এক রফতানিকারক দ্য ইকোনমিক টাইমসে জানান, বাংলাদেশ সরকার এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গম রফতানির বিশেষ তাড়া নেই। কারণ, বাংলাদেশের গুদামগুলোতে চালের মজুত রয়েছে।
ওই রফতানিকারক আরো বলেন, বাংলাদেশ আগে মজুত চাল বিক্রি করতে চায়, যেনো সেই জায়গায় আমদানি করা গম মজুত করা সম্ভব হয়।