শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

সিনেমার মতো প্রেম, তবুও কিশোরীর ইজ্জতের মূল্য ৪৫ হাজার টাকা!

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৪ জুন, ২০২২
  • ১২৬ বার পঠিত

সিনেমার মতো প্রেম ছিল কিশোর-কিশোরীর। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরীর (১৩) সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তার কিশোর প্রেমিক (১৫)।
এ ঘটনা চাউর হওয়ায় শালিসি বৈঠক হয়। সেখানে ভুক্তভোগীর ইজ্জতের মূল্য নির্ধারণ হয় ৪৫ হাজার টাকা! এতে মনের কষ্টে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে ওই ভুক্তভোগী।

শুক্রবার (৩ জুন) বিকেলে নেত্রকোনার মদন পৌরসভার মাস্টারপাড়া এলাকায় শালিসি বৈঠকটি হয়। ওই স্কুলছাত্র উপজেলার মদন সদর ইউনিয়নের বাগদাইর গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে ভুক্তভোগীর পরিবার ঢাকায় বসবাস করেন। তবে সে বাড়িতে থেকেই পৌরসভার একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। ওই কিশোরও ভুক্তভোগীর স্কুলে নবম শ্রেণির ছাত্র। সাত মাস আগে সে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কও করে।

এক সপ্তাহ আগে প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে নিজের বাড়ি নিয়ে যায় ওই কিশোর। তার পরিবার এ সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় ভুক্তভোগী ঢাকায় নিজের পরিবারের কাছে চলে যায়।

সেখান থেকে বুধবার (১ জুন) ফের প্রেমিকাকে বিয়ের কথা বলে নিজের বাসায় নিয়ে আসে ওই কিশোর। বিয়ে না হওয়ায় দুজনই আশ্রয় নেয় মাস্টার পাড়া এলাকায় একটি বাসায়।

এসব ঘটনায় কয়েক দফা শালিসি বৈঠক হয়। পরে শুক্রবার বিকেলে শালিসের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। এতে ছেলে পক্ষকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করে শালিসকারীরা।

ভুক্তভোগী জানায়, স্কুলে যাতায়াতের পথে ওই কিশোর তাকে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দিত। সে রাজি না হওয়ায় দুবার গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কয়েকবার তার সামনে হাতও কেটে ফেলেছিল। এসব দেখে কিশোরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে সে। তারপর বিয়ের কথা বলে কয়েকবার তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে।

কিশোরী আরও জানায়, এক সপ্তাহ আগে তার প্রেমিক নিজের বাসায় তাকে নিয়ে গিয়ে বিয়ের কথা বলে। কিন্তু তার পরিবার কিশোরীকে ভয় দেখিয়েছে। বুধবার আবার তাকে ডেকে নিয়ে আসে ওই কিশোর। বিয়ের জন্য বাড়ি নিয়ে গেলে কিশোরের মা তাকে মারধর করেন। পরে তাকে নিয়ে মাস্টার পাড়ায় একটি বাসায় আশ্রয় নেয় তার প্রেমিক।

সে আরও জানায়, শুক্রবার বিকেলে তাদের এলাকার চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম দরবার করে তার ইজ্জতের মূল্য ৪৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছে। সে এ ঘটনার বিচার চায়। নয়তো গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে হুমকি দিয়েছে সে।

ভুক্তভোগীর বাবা জানান, তার মেয়ের মান-সম্মান সব শেষ হয়ে গেছে। চেয়ারম্যান সাহেব দরবার করে মীমাংসা করছেন। মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের উপায় নেই। জরিমানার ৪৫ হাজার টাকা চেয়ারম্যানের কাছে জমা আছে। ৩ সপ্তাহ পর গিয়ে নিয়ে আসতে বলেছে।

অভিযোগের শিকার কিশোরের পরিবারের সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তার কথা বলতে রাজি হয়নি।

অভিযোগ ও ৪৫ হাজার টাকা ইজ্জতের মূল্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বিষয়টি ভুয়া বলে উড়িয়ে দেন মদন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঘটনাটি আমার জানা নেই। এমন কোনো ঘটনার মীমাংসা আমি করিনি।

এ ব্যাপারে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, এমন কোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তারা অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com