শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২১ অপরাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

রোহিঙ্গা সংকট গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়াবে: রাষ্ট্রপতি

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৯
  • ৩০৩ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ মিয়ানমার নাগরিককে নিজ ভূমিতে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য সিআইসিএ অংশীদারদের স্বতস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এই সমস্যার সমাধান না হলে গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি।

শনিবার তাজাকিস্তানের রাজধানী দুশানবের নাভরুজ প্রাসাদে কনফারেন্স অন ইন্টারএ্যাকশন অ্যান্ড কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার্স ইন এশিয়ার (সিআইসিএ) পঞ্চম সম্মেলনে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি।

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সবার সহযোগিতা চেয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। আমরা এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই, এজন্য তাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি করেছি। তবে এতে যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে এই সংকট গোটা অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে।’

রাষ্ট্রপতি রোহিঙ্গা সংকটের ব্যাপারে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ‘ভয়ঙ্কর গণহত্যা ও ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার রোহিঙ্গা জনগণের জন্য বাংলাদেশ তার দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। জাতিগত নিধন ও সীমাহীন মানবিক বিপর্যয়ের এই ভয়াবহ ঘটনা পাঠ্যবইয়ে নজির হিসেবে স্থান পেয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিজ ভূমি থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় চাওয়ার পরে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।’

এই অঞ্চলে বিভিন্ন ইস্যুতে একত্রে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমরা সহিংস চরমপন্থী, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ, জোরপূর্বক উদ্বাস্তু অভিবাসীদের সীমান্ত অতিক্রম করার মতো অনেক গুরুতর সমস্যার মোকাবেলা করছি। এজন্য এসব ইস্যুও মোকবেলায় সাড়া দিতে সমন্বিত সহযোগিতা প্রয়োজন।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘অনিয়মিত অভিবাসন, মাদক পাচার, আঞ্চলিক দাবি, জাতিগত সংঘাত, বিচ্ছিন্নতাবাদ, অর্থনৈতিক সমস্যা এবং দৃশ্যমান জলবায়ু পরিবর্তন এশিয়া অঞ্চলের নিরাপত্তা ক্রমাগত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এশিয়ার শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে সহযোগিতা জোরদারে বহুজাতিক সংস্থা সিআইসিএ গঠিত হয়েছে । এই জটিল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত প্রচেষ্টা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’ তিনি এশিয়ার নিরাপত্তা ও সহযোগিতার ইস্যু সমাধানে সিআইসিএ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এশিয়ায় নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। সংলাপ ও সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা এগুলো অর্জন করতে পারি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গৃহীত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির মূলনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়’ একথা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশ সিআইসিএ লক্ষ্য ও মূলনীতি সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এই নীতি অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন গুরুত্ব দিয়ে সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখছে।’ তিনি বলেন, ‘এই ক্ষেত্রে সিআইসিএ আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।’

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়েপ এরদোয়ান, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথি্রপালা সিরিসেনা, উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাভকাত মিরজিইয়োইয়েভসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা সম্মেলনে অংশ নেন।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রাহমোন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মেলনে স্বাগত জানান তিনি।

এই সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার দুশানবে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। রবিবার দুশানবে থেকে উজবেকিস্তান সফরে যাবেন তিনি। ১৯ জুন তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com