অনলাইন ডেস্ক,সিটিজেন নিউজ: বরফাচ্ছন্ন ভূখ- গ্রিনল্যান্ড এক দিনে ২ বিলিয়ন টনেরও বেশি বরফ হারিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অস্বাভাবিকভাবে এই পরিমাণ হিমবাহ গলে যায়। সিএনএনের খবরে বলা হয়, সমগ্র গ্রিনল্যান্ডের ৪০ শতাংশ এলাকাজুড়ে এই বরফ হ্রাসের ঘটনা ঘটে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুনের মাঝামাঝি সময়ে এভাবে এত পরিমাণ বরফ গলে যাবে তা অপ্রত্যাশিত ছিল। জুন থেকে অগাস্টে গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলার সময় থাকলেও মূলত বরফ গলন হয় জুলাই থেকে। এবার অসময়েই ওয়াশিংটন মনুমেন্টের চেয়ে আটগুণ বেশি বরফ গলে গেল।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়ার গ্রিনল্যান্ড ক্লাইমেট বিশেষজ্ঞ থমাস মোটে বলেন, এটা অস্বাভাবিক তবে অপ্রত্যাশিত নয়। ২০১২ সালের জুন মাসেও রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছে গ্রিনল্যান্ডে। তবে এটাও এবার খারাপ ইঙ্গিত। ২০১৯ সালে বরফ গলার রেকর্ড হতে পারে গ্রিনল্যান্ডে। নির্ধারিত সময়ের তিন সপ্তাহ আগেই বরফ গলা শুরু হয়েছে।
এর আগে জেসন বক্স নামের এক আবহাওয়াবিদ বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডে ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি বরফ গলবে। ২০০৭, ২০১০ ও ২০১২ সালে ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বরফ গলার ঘটনা ঘটেছিল। ২০১২ সালে গ্রিনল্যান্ডে চার শ বিলিয়ন টনের বেশি বরফ গলেছে। এভাবে বরফ গলার ঘটনা যদি নিয়মিত ঘটে তাহলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা দ্রুতই বাড়বে, যা হুমকির।
এ বছরের ২১ জানুয়ারি দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বরফ আচ্ছাদিত গ্রিনল্যান্ডের পরিবর্তন অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে প্রকট। ২০০৩ সাল থেকে বর্তমান সময়ে পূর্বের ধারণার চেয়ে চার গুণ হারে বরফ গলছে। দক্ষিণ-পশ্চিম গ্রিনল্যান্ডে এই হার সবচেয়ে বেশি।
এ ছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বরে ‘সায়েন্টিফিক জার্নাল নেচার’ এক প্রতিবেদনে জানায়, গত কয়েক দশকে গ্রিনল্যান্ডে বরফ গলার হার শিল্পযুগ পূর্বের সময়েরে চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। ৮০ ভাগ বরফের দেশটির সব বরফ গেলে গেলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৭ মিটার বাড়বে। তলিয়ে যাবে বিশ্বের অনেক নি¤œাঞ্চল। বাস্তুহারা হবে লাখ লাখ লোক।