বিশিষ্ট কূটনীতিক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও রাষ্ট্রদূত মহিউদ্দিন আহমদ মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি …..রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে প্রবাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দেন।
সোমবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার বাসায় মারা যান তিনি। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার স্ত্রী বিলকিসি মহিউদ্দিন।
বিলকিসি মহিউদ্দিন সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, উনি আর নেই। আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
মহিউদ্দিন আহমদের ছোট ভাই জিয়াউদ্দিন আহমদ জানান, তিনি লিভার সিরোসিস, কিডনি জটিলতা এবং ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন। তিন সপ্তাহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা নেয়ার পর চারদিন আগে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
একাত্তরের সময়ে লন্ডনে তৎকালীন পাকিস্তান হাই কমিশনে কর্মরত ছিলেন মহিউদ্দিন। ১ অগাস্ট ট্রাফলগার স্কয়ারে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এক সমাবেশে তিনি পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করার ঘোষণা দেন।
ইউরোপের দেশগুলোতে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকদের মধ্যে তিনিই প্রথম পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের কাজে যোগ দেন।
মহিউদ্দিন আহমদ ১৯৪৪ সালের ১৯ জুন ফেনীর নুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একাত্তরের উত্তাল দিনগুলোতে লন্ডনে তৎকালীন পাকিস্তান হাই কমিশনে কর্মরত ছিলেন মহিউদ্দিন। ১ অগাস্ট ট্রাফলগার স্কয়ারে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে এক সমাবেশে পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করার ঘোষণা দেন তিনি। পরে বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তরাজ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সার্বক্ষণিক ভিত্তিতে কাজ করেন।
ইউরোপের দেশগুলোতে কর্মরত বাঙালি কূটনীতিকদের মধ্যে মহিউদ্দিনই প্রথম পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত গঠনের কাজে যোগ দেন। সেই উত্তাল সময়ে ২৩ আগস্ট তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয়।
নব্বইয়ের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাকে চাকরিচ্যুত করে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে এবং পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে তিনি অবসর নেন। অবসরজীবনে নিয়মিত কলাম লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমদ।