পদ্মাসেতুর নাট-বল্টু খোলার অভিযোগে বায়েজিদ নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তিনি এক সময় পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের কর্মী ছিলেন। বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করছেন।
পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আল-হেলাল নয়ন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নয়ন জানান, বিপ্লব গাজী ছাত্রদলের সভাপতি থাকাকালে বায়েজিদ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন মিটিং-মিছিলে অংশ নিলেও তিনি (বায়েজিদ) দলের কোনো পদ-পদবিতে ছিলেন না। অনেকদিন ধরেই সে (বায়েজিদ) এলাকায় নেই। ঢাকায় রাজনীতি করে কি না জানি না। ব্যক্তির অপরাধের দায় দল কখনোই নেবে না।
বদরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান মুক্তা গণমাধ্যমকে জানান, বায়েজিদের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, এটা সবাই জানে। কিন্তু বায়েজিদ কি করত সেটা জানি না। সে এলাকায় থাকে না।
প্রসঙ্গত, দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার পরই সেখানে ভিড় করেন উৎসুক জনতা। শুরু হয় নিয়ম ভাঙার হিড়িক। গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলা, টিকটক ভিডিও বানানো, মূত্র বিসর্জনসহ নানা বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে।
কাইসার ৭১ (Kaisar 71) নামে একটি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথমে বায়েজিদের পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খোলার ভিডিওটি আপলোড করা হয়। পরবর্তীতে ৩৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন সাইটে ভাইরাল হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর কংক্রিটের রেলিংয়ের ওপর থাকা লোহার রেলিংয়ের দুটি নাট খুলছেন বায়েজিদ। মূলত নাট দুটি দিয়ে কংক্রিটের রেলিং ও লোহার রেলিংয়ের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নাট খুলে হাতে নিয়ে বায়েজিদকে বলতে শোনা যায়, ‘এই হলো আমাদের পদ্মা সেতু। আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতু।’
এ সময় ক্যামেরার পেছন থেকে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, ‘নাট খুলে ভাইরাল করে দিয়েন না।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। বায়েজিদের এমন কাণ্ডে নেটিজেনদের অনেকেই তার শাস্তির দাবি করেছেন।
রোববার (২৬ জুন) বিকেলে রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে বায়েজিদকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার রেজাউল করিম (মাসুদ) গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, ভিডিওতে যে যুবককে পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলতে দেখা গেছে, তার নাম মো. বায়েজিদ। তাকে আমরা আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তিনি কেন এই কাজ করেছেন, সেটা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে আগামীকাল (সোমবার) সিআইডি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।