গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার আত্মীয় পরিজন সহ ঘনিষ্ঠ সহচরদের দুর্নীতি-অনিয়মের অনুসন্ধান সহ তাদের সকলের সম্পদের হিসাব চেয়ে সঠিক অনুসন্ধান ও তদন্ত করে আইনের আওতায় এনে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করতে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বুধবার দুদক কার্যালয়ে জমা দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ড সহ অসংখ্য পরিবারকে সর্বশান্ত করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট আর অন্যের জমি ফ্যাক্টরী দখল সহ চাঁদাবাজী এবং ঠান্ডা মাথায় মানুষ খুন করার মাষ্টারমাইন্ডের নাম গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। সাবেক এই আওয়ামীলীগ নামধারী বহিষ্কৃত নেতার অজানা উত্থানপতনের তথ্য উপাত্ত জাতির সামনে তুলে ধরা সহ আপনাদের (প্রশাসনের) দৃর্ষ্টিতে অনুসন্ধানের স্বার্থে আলোকপাত করছি।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি নেতা সাবেক মেয়র আবদুল মান্নান পবিত্র বড় হজ্বের টাকাআত্মসাত করে আলোড়ণ সৃষ্টি করেছিলেন, আর বর্তমান সরকারের সাবেক মেয়র ও আওয়ামীলীগ নেতা সেজে জাহাঙ্গীর আলম ছোট হজ্ব অর্থাৎ বিশ্ব এজতেমার টাকা আত্মসাত করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন। এরপর থেকে শুরু হয় জাহাঙ্গীরের দুর্নীতি আর কু-কীর্তি। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগসহ বেশকিছু গুরুতর অভিযোগ সংক্রান্তে একটি ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ঘুরে ঘুরে এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের জালে এসে পড়েছে।
জানা গেছে দুদক ইতিমধ্যে একাধিক টিম দিয়ে গাজীপুরের আলোচিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবার সহ তাদের সাথে সম্পৃক্ত ও আত্মীয়সজনদের আয়ের উৎস এবং তাদের সম্পদের হিসাব খুজতে দুদক কাজ শুরু করেছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা/কর্মচারী ও এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের তথ্যের ভিত্তিতেঅনুসন্ধানী রির্পোট সহ বিভিন্ন দপ্তরে প্রেরিত ফাইলে পাওয়া সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এবং প্রকৌশলী দেলোয়ার হত্যার মাষ্টারমাইন্ড খ্যাত সাবেক এই মেয়র জাহাঙ্গীরের নামবারবার উঠে এসেছে।
জানা যায় সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের নানাবাড়ি গাজীপুরে। তবে তার দাদার বাড়ী নোয়াখালীতে। কৃষক মিজানুরের অভাবের সংসারে ১৯৭৯ সালে জন্ম গ্রহন করে জাহাঙ্গীর । স্থানীয়চান্দনা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাসের পর ভর্তি হন ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজে । জাহাঙ্গীরদের পরিবারে অর্থনৈতিক টানাপোড়নেরকারণে তার মামা বিএনপি কর্মী শফিকুল আলমতাদের অভাবের সংসারে সামাল দিতে ভাইগ্নাজাহাঙ্গীরকে নিজের কাজের সঙ্গে যুক্ত করে। জমি কেনা বেচা ও দালালী করে জাহাঙ্গীর, ধীরে ধীরে জমি বাড়ি দখলউচ্ছেদ করে কেনা বেচার কাজে জড়িয়ে পড়ার মাধ্যমেজাহাঙ্গীরের হাতে কাচা টাকা পয়সা আসা শুরু হয়,এর পর জাহাঙ্গীর গাজীপুর ও ময়মনসিংহে ঝুট ব্যবসাশুরু করে এবং এক পর্যায়ে অধিকাংশ ফ্যাক্টরীর ঝুটব্যবসা তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় । অনুসন্ধানে জানাযায়, জাহাঙ্গীরের অর্থ আয়ের একটি বড় খাত হলোগাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্সেরঝুট ও সুতার কারবার এবং জায়গা জমি- কেনা বেচা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফ্যাষ্টরী দখল সহ কমিশন বাণিজ্যকরা । জাহাঙ্গীর এখন নিজেকে সম্রাট জাহাঙ্গীর মনেকরে, বিভিন্ন মাফিয়াদের সাথে সখ্যতা তৈরি হওয়ায়, এখন তার নিজস্ব বাহিনী তৈরি হয়েছে এ কারণেজাহাঙ্গীর এখন তার বিশ্বস্ত সহযোগীদের দিয়ে সকলঅপকর্ম গুলো পরিচালনা করে । এ ছাড়া গাজীপুরএলাকায় বিভিন্ন কারখানার লাইসেন্স আটকে দিয়েচাঁদা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। এলাকার একাধিক প্রবীণ ব্যক্তিদের ভাষ্য থেকেজানা যায়, কোনো এক কারখানা মালিকের জমিকেনার অনেক পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেনজাহাঙ্গীর। এরপর থেকে তাকে আর পেছনে ফিরেতাকাতে হয়নি । ধীরে ধীরে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়াএবং ঝুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে ভাগ্যের চাকা দ্রুত ঘুরেযায় জাহাঙ্গীরের । এ যেন এক আলাদিনের চেরাগআর জাদুর কাঠির স্পর্শে ফুলেফেঁপে ওঠার গল্পকে হারমানিয়েছে জাহাঙ্গীরের কাহিনী । জাহাঙ্গীরের লাইফস্টাইল দিনে দিনে পাল্টে যায়, তার রাজত্বে আরচলন বলনে আসে ভিন্ন মাত্রা । সে একাধিক দেহরক্ষীনিয়ে চলতেন । ভিআইপিদের আদলে তারগাড়িবহরের সামনে পেছনে সব সময় থাকত হোন্ডা, পিকাপ ও একাধিক গাড়ি সহ অ্যাম্বুলেন্স।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের একাধিক কাউন্সিলরের থেকে পাওয়া অভিযোগ- প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেন হত্যার ঘটনায় জাহাঙ্গীরের ভূমিকা শুরু থেকেই ছিল সন্দেহজনক ও প্রশ্নবিদ্ধ এই জাহাঙ্গীর ছিলেন হত্যাকান্ডের মাষ্টারমাইন্ড । ঔই ঘটনার পর সিটি করপোরেশন থেকে কোনো শোক প্রস্তাবও গ্রহণ করেনি জাহাঙ্গীরের ভয়ে । মানববন্ধনসহ অন্য কোনো কর্মসূচিও পালন কেউ করেননি জাহাঙ্গীর ও তার বাহিনীর ভয়ে । অভিযোগ আছে, একটি প্রভাবশালী চক্রকে ব্যবহার করে জাহাঙ্গীর, কথিত এক প্রকল্প তিনবার দেখিয়ে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা গায়েব করার পরিকল্পনা করেছিল । এতে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে প্রকৌশলী দেলোয়ারকে প্রাণ দিতে হয় । ওই হত্যার পর মেয়রের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত সুন্দর মনির ওরফে কিলার মনির কিছুদিন গা-ঢাকা দেন ।জাহাঙ্গীরের অপকর্ম গুলো অংশীদার হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জাহাঙ্গীরের সম্প্রতি ২৫ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে এজন্য এখন জাহাঙ্গীর অর্থকষ্ট ও মনোকষ্টে আছেন মর্মে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরের একটি ঘনিষ্ট সূত্র।
সোহাগ, আশরাফুল, কামরুল চেয়ারম্যান, রানা মোল্লা, সুন্দর মনির জাহাঙ্গীরের অপরাধ কর্মকাণ্ডের মূল হোতা।
এদিকে জাহাঙ্গীরের বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তেএকটি বিশ্বস্ত সূত্র থেকে জানা যায়, ভারত ও দুবাইয়ের একটি মাফিয়া গ্রুপের সাথে জাহাঙ্গীরের সম্পৃক্ততা আছে যাদের মাধ্যমে জাহাঙ্গীর অন্ত্র ও অর্থ আদান প্রদান করে থাকে, তাদেরই একজন হলেন শফিকুল ইসলাম সুমন, উক্ত শফিকুল জাহাঙ্গীরকে একাধিক বার দুবাই ও ভারত নিয়ে মিটিং করিয়েছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় অর্থ বিনিয়োগ করিয়েছেন, সেই সাথে ভারতের মোদি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বাংলাদেশের হাসিনা সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করে জাহাঙ্গীরের হারানো পদ পদবী ফিরে পেতে জোরালো তদবির চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
এই জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের একাধিক নীতি নির্ধারকের নাম ব্যবহার করে নানা ভাবে হয়রানি করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, গাজীপুরের আলোচিত সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম ও তার পরিবার এবং সঙ্গী সাথীদের বিরুদ্ধে দুদুকের অনুসন্ধান শুরু হওয়ায়, কৌশলী সুচতুর জাহাঙ্গীরও থেমে নেই নিজেকে বাঁচাতে এবং তার পদ পদবী ফিরে পাওয়ার নেশায় মাঠে নেমেছে, একটি দায়ীত্বশীল সূত্র থেকে জানা এবং জাহাঙ্গীরের বর্ণীত গ্রুপ সদস্যদের একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সম্প্রতি জাহাঙ্গীর বলেছে, আমার মেয়র পদ এবং দলীয় পদ এই সরকার সাময়িক ভাবে কেড়ে নিতে পারলেও আমাকে দেশের কোনো কোর্ট বা জেলে পাঠাতে পারেনি, এবং এ ক্ষমতা দুদক কেন সরকারও আমাকে আটক করতে পারবে না কারণ সরকারের পায়ের নিচে এখন মাটি নেই! তাছাড়া জাহাঙ্গীর আরো বলে আমার লোক সব জায়গাতেই আছে। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই! তাছাড়া জাহাঙ্গীর আরো বলে আমার লোক সব জায়গাতেই আছে, অনেক নেতার গোপনীয় বিষয় যদি মুখ খোলা হয় তাহলে অনেকরই এবং সম্মান থাকবেনা, এজন্য কোনো নেতাই জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মুখ খুলবেনা বলে দাবী করেন তিনি।
উল্লেখিত তথ্য বহুল ঘটনা এবং দুর্নীতি আর অবৈধ কর্মকান্ডের মূলহোতা, বাঙ্গালী জাতির কলঙ্ক- সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অসম্মান এবং প্রশ্নবিদ্ধ করার যে দুঃসাহস দেখিয়েছে, সেই কলঙ্কিত দুর্নীতিবাজ জাহাঙ্গীর ও তার পরিবার সহ তার সহযোগী ও দোশরদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি সহ তাদের সকলের সম্পদের হিসাব নিয়ে,অবৈধ সম্পদগুলো বাজেয়াপ্ত করে, রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেওয়ার কার্যকরি ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।
অভিযোগেরপ বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু এবিষয়ে জানান,জাহাঙ্গীররের হাত অনেক লম্বা, হাইকমান্ডের আশিবাদ তার প্রতি আছে, অচিরেই দেখতে পাবেন,জাহাঙ্গীর আবার মেয়রের চেয়ারে বসবে এবং তার হাত দিয়েই গাজীপুর সিটির চার হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে, এ ছিগন্যাল সে পেয়ে গেছে, এখন শুধু দুদকের ফরমাল আইওয়াসটা বাকি, আর নিউজ টিউজ যা বলছেন, এগুলোর জাহাঙ্গীর আমলে নেয়না,জাহাঙ্গীরতো নিজেই সারা বাংলাদেশের অনলাইন নিউজ এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং একটি প্রতিষ্ঠিত টেলিভিশন চ্যানেলের ডাইরেক্টর, সুতরাং অপেক্ষা করেন,দেখেন কি হয়?