নবায়নের নির্দেশনা চেয়ে বেসকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান ‘অধিকার’ কর্তৃক উচ্চআদালতে দায়েরকৃত রীট পিটিশনটি (রিট পিটিশন নং- ৫৪০২/২০১৯)অদ্য ২৭/০৭/২০২২ তারিখে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অধিকার এর আইনজীবী এডভোকেট রুহুল আমিন ভূঁইয়া। বিচারপতি মোঃখসরুজ্জামান ও বিচারতি মোঃ ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ১৫ নং বেঞ্চ আদালতে অদ্য ২৭/০৭/২০২২ তারিখে রিটপিটিশনটির চূড়ান্ত জাজমেন্ট প্রদানের দিন ধার্য্য ছিল।জাজমেন্ট প্রদানের পূর্বেই অধিকারের আইনজীবী রীটপিটিশনটি প্রত্যাহার করে নেন। ফলে আদালত ‘Discharged for non-prosecution’ জাজমেন্ট প্রদান করেন। ফলে রীটপিটিশনটির চূড়ান্ত সমাপ্তি হয়েছে।রাষ্ট্রপক্ষে উক্ত শুনানীতে অংশ নিয়েছেন ডেপুটি এটর্নী জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়, কাজী মাইনুল হাসান ও বিপুল বাগ মার।
উল্লেখ্য, ২৫/০৯/২০১৪ তারিখে ‘অধিকার’ এর তরফ হতে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোতে নিবন্ধন নবায়নের জন্য আবেদন দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির আবেদনপত্র ও বাৎসরিক আর্থিক অডিট রিপোর্টে নানাবিধ অসংগতি থাকায় এবং এনজিও ব্যুরোকর্তৃক তলবকৃত ব্যাখ্যার জবাব প্রদান না করায় নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি। ২৫/০৩/২০১৫ তারিখে প্রতিষ্ঠানটির এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধন (নিবন্ধন নম্বরঃ ০৯২৪) মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।
নিবন্ধন নবায়ন ছাড়াই প্রায় ৪ বছরের অধিক সময় ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর ১৩/০৫/২০১৯ সালে নিবন্ধন নবায়নের নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রীটপিটিশন দায়ের করে অধিকার। বিচারপতি সৈয়দ রিফাত আহমেদ এবং বিচারপতি মোঃইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে উক্ত রিটশুনানি শেষে এনজিও ব্যুরোর নিকট হতে প্রাসঙ্গিক ব্যাখ্যা তলব জারি করা হয়। ২৩/০৫/২০১৯ তারিখে এনজিও ব্যুরো পক্ষ হতে রুলের জবাব আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং বরাবর প্রেরণ করা হয়।
এনজিও বিষয়ক ব্যুরো হতে যথাসময়ে জবাব প্রদান করা হলেও ‘অধিকার’ পক্ষের আইনজীবীর নিষ্ক্রিয়তার কারণে দীর্ঘ প্রায় তিন বছর উক্ত রিটপিটিশনটির কোন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। অবশেষে চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে বিচারপতি মোঃখসরুজ্জামান ও বিচারতি মোঃইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ১৫ নং বেঞ্চ আদালত উক্ত রীটপিটিশনটির উপর নিয়মিত শুনানি শেষে আজ চূড়ান্ত রায় প্রদানের দিন ধার্য্য ছিলো।
২০১৫ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও অদ্য বধি অধিকার এনজিওটি নিবন্ধন নবায়ন ব্যতিরেকেই তাদের কার্যক্রম চালু রেখেছে। ০৭/০২/২০২২ তারিখে এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর পক্ষ হতে অধিকার এর চলমান কার্যক্রম প্রসঙ্গে বিবিধ তথ্য জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু রীটপিটিশনের অজুহাত দেখিয়ে ‘অধিকার’ তথ্য প্রদানের অস্বীকৃত জানায়। এর প্রেক্ষিতে গত ০৫/০৬/২০২২ তারিখে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো হতে যথাযথ কারণ প্রদর্শন পূর্বক নামঞ্জুর করে চিঠি ইস্যু করা হয়
বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘অধিকার’ ১৯৯৫ সালের ২৫ মার্চ এনজিও ব্যুরো হতে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-০৯২৪। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রতিষ্ঠানটি দেশের আইনশৃঙ্খলা ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সংক্রান্ত বিষয়ে ত্রৈমাসিক ও বাৎসরিক প্রতিবেদন তৈরি করে বিভিন্ন দাতা গোষ্ঠী এবং পশ্চিমা দেশসমূহের দূতাবাস সমূহে প্রেরণ করে আসছে। এছাড়াও সমসাময়িক বিভিন্ন আলোচিত ইস্যুতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ হতে মন্তব্য ও বিবৃতি প্রদান করা হয়ে থাকে যা বিভিন্ন আন্তর্জাতি গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারিত হয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা সমূহ অধিকারের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে নিজেদের প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে মন্তব্য ও বিবৃতি প্রচার করলেও অধিকার কর্তৃক প্রচারিত প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা এবং তথ্যের উৎসের ব্যাপারে বিভিন্ন সময়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অধিকার সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং মূল কর্ণাধার আদিলুর রহমান খান অক্টোবর ২০০১- মে ২০০৭ পর্যন্ত ডেপুটি এটর্নী জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ই মে মতিঝিলের শাপলা চত্ত্বরে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে হেফাজতের কর্মী সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা নিয়ে অসত্য ও উদ্দেশ্যমূলক তথ্য প্রচারের দায়ে ১০/০৮/২০১৩ তারিখে অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়েরকৃত (মামলানং- ০১/২০১৩) মামলাটির কার্যক্রম বর্তমানে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে চলমান রয়েছে।