১৫ আগস্ট দূতাবাস প্রাঙ্গণে শোক দিবসের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যথাযথ পোস্টার ও ব্যানার লাগানো হয় এবং শ্রোতারা সাদা-কালো পোশাকে এবং কালো ব্যাজ ধারণ করে কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সকালে দূতাবাস কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান চ্যান্সারিতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন। এরপর দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। দূতাবাসের প্রদর্শনী হলে এই ক্যারিশমাটিক নেতার অবিস্মরণীয় ঘটনা তুলে ধরে ‘ফটোগ্রাফিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও উত্তরাধিকার’ শীর্ষক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
সন্ধ্যায় স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রবাসী সদস্য, রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী এবং দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য এবং প্রবাসী বাংলাদেশিরা চ্যান্সারির প্রধান ফটকের কাছে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু, তার পরিবারের সদস্য ও অন্যান্য শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য পাঠ করা হয়।
এরপর জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধুর জীবনব্যাপী সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান।
রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান তার বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতাবিরোধীদের গভীর ষড়যন্ত্রে শহিদ হওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্য শুধু জাতির জনককে শারীরিকভাবে হত্যা করা নয়, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও আমাদের মুক্তির চেতনাকে মুছে ফেলার জন্যও। কিন্তু খুনিরা বাঙালির মন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ও তার নীতিকে মুছে দিতে পারেনি; কিংবা তারা মুক্তির চেতনার চিরন্তন শিখা নিভিয়ে দিতে পারেনি।
রাষ্ট্রদূত প্রবাসীদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান এবং জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একযোগে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে আইনি মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা পর্বের পর স্বাধীন বাংলাদেশে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব এবং জাতির পিতা ও তার পরিবারের সদস্যদের শাহাদতের ওপর নির্মিত দুটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা একটি সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পর্বও অনুসরণ করা হয়। এ পর্বে জাতির পিতার শাহাদতের ওপর কবিতা আবৃত্তি করা হয়।
পরিশেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের অন্যান্য সব শহিদ সদস্যদের আত্মার শান্তি এবং দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।