দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে নিজস্ব কার্যালয়ে তিন বাহিনীর প্রধান ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। পরবর্তীতে তিন বাহিনীর প্রধান বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২২’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দেবেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী ৪ জন সেনা, ২ জন নৌ এবং ২ জন বিমান বাহিনী সদস্যকে ২০২১-২০২২ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করবেন। অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সংবর্ধনায় জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা, মন্ত্রী ও সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি, প্রতিমন্ত্রী ও সমমর্যাদা সম্পন্ন ব্যক্তি, ডেপুটি স্পিকার, বাংলাদেশে নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, মুখ্য সচিব, তিন বাহিনীর সাবেক প্রধানসহ সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, ২০২২ সালে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্তরা, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী, স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ঢাকা এলাকায় বসবাসরত খেতাবপ্রাপ্ত কর্মকর্তা/তাদের উত্তরাধিকারী, উচ্চপদস্থ বেসামরিক কর্মকর্তা এবং তিন বাহিনীর চাকরিরত ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনী প্রধান নৌবাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান ২২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা প্রদান করবেন। ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা. যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দফতরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে।
এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হবে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ দুপুর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য নিকটস্থ ঘাটসমূহে নোঙর করা থাকবে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশনে সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘বিশেষ অনির্বাণ’ অনুষ্ঠান ও বাংলাদেশ বেতারে ‘বিশেষ দুর্বার’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ ও সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে।