জামালপুরে শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ঘুরে বেড়াচ্ছে বনপ্রাণী একটি বানর। বানরটির সঙ্গে অনেকেই ঠাট্টা মশকরা করলেও অনেকেই জানিয়েছেন ক্ষোভ। রাত দিন আর ভোর সকালে দেখা মিলছে বানরটির।
পৌর শহরের দয়াময়ী এলাকায় দেখা মিলে বানরটির। ভোর সকালে শহরের দয়াময়ী এলাকার বংশ খালের ড্রেনের রেলিংয়ে বসে চলাচলকারী মানুষের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওখান থেকে আবার আশপাশের বাসা বাড়ির ছাদে কিংবা টিনের চালে গাছের ডালে বসে থাকে।
কৌতূহলি সাধারণ মানুষ বলছেন কোথা থেকে এসে সে বানরটি লোকালয়ে ঢুকে পড়লো। দীর্ঘ ৬ মাস ধরে বানরটি জামালপুর শহরে অবস্থান করলে বন বিভাগের কেউ তার খোঁজ নিচ্ছে না। শহর জুড়ে বানরকে নিয়ে ব্যাপক কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের দয়াময়ী এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল বলেন, বানরটি আমার বাসার সামনে প্রায়ই আসে। বংশ খালের ড্রেনের রেলিংয়ে হেঁটে হেঁটে আসে তো আবার ড্রেন পার হয়ে গাছের মগ ডালে চড়ে বসে থাকে। সে বসে বসে গাছের কচি পাতা খায়। কখনো কখনো গাছ থেকে নিচে নেমে আসে। বানরটা আমার বাসার সামনে এলে আমি তাকে বাদাম খেতে দেই। বিস্কুট দেই। তবে বাদামই তার খুব পছন্দ। কোনো কোনো দিন ভোরে আসে। আবার কোনো কোনো দিন দুপুরে বা বিকালে এই এলাকায় আসে।
তিনি বলেন, বানরটাকে দেখতে এলাকার নারী-পুরুষ, শিশু কিশোররা দল বেঁধে ভিড় করে। কিন্তু বানরটি কারো কোনো ক্ষতি করে না। শান্তভাবে বসে থাকে। বানরটি আসা মাত্রই এলাকায় একটা হুলস্থূল অবস্থা তৈরি হয়। কেউ কেউ ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারে। লাটি হাতে নিয়ে মারতে যায়।
অন্তত ছয় মাস থেকে বানরটিকে শহরে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। সে নির্দিষ্ট কোনো এলাকায় বেশি দিন অবস্থান করে না। একেক সময় স্থান পরিবর্তন করে প্রতিনিয়ত। তবে বাদাম তার পছন্দের খাবার। শহরে কোন বন জঙ্গল না থাকায় বানটির খাবারের সংকটে পড়েছে। যখন সে ক্ষুধার্ত থাকে তখন বিভিন্ন খাবার দোকানে ছুটে আসে।
অনেকের ধারণা গত কয়েক দিন ধরে বানরটা আগের চেয়ে কিছুটা শুকিয়ে গেছে। দিন দিন কিছুটা দুর্বলও হয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষের ধারনা বানরটি পাশ্ববর্তী টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ি বন অথবা জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জের পাহাড়ি বন থেকে দলছুট হয়ে চলে এসেছে।
শহরের সাধারণ মানুষ বলছেন, বানরটাকে যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে বন বিভাগের কর্মকর্তারা উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
পরিবেশ সংরক্ষণ আন্দোলনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে বানরটি খাদ্যের সন্ধানে মধুপুর অথবা শেরপুর অঞ্চলের জঙ্গল থেকে লোকালয়ে চলে এসেছে। একদিকে ক্ষুধার্ত অপরদিকে শিশু-কিশোরদের তাণ্ডবে বিব্রত অবস্থায় বানরকে দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করছে। বিশেষ করে শহরের বংশখালের রাণীগঞ্জ বাজার এলাকা থেকে দয়াময়ী মোড়ের দক্ষিণে গফুর ভিলা পর্যন্ত তার অবাদ বিচরণ।
শেরপুর বন বিভাগের রেঞ্জার আব্দুল্লাহ আল আমিনের দাবি, বানরকে কেউ অত্যাচার না করলে কিংবা খাদ্য দিলে কারো কোনো ক্ষতি করবে না। তবে দ্রুত বানরকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।