শীতে শরীরের কোষ ও টিস্যু স্নায়ুর ওপর বেশি চাপ দেয়। ফলে অস্থিসন্ধিতে ব্যথাও এই সময় বেড়ে যায়। তাই ব্যথা এড়াতে এ সময়টাতে লাইফস্টাইলে আনতে পারেন বেশ কিছু পরিবর্তন।
শীতে আর্থ্রাইটিস বা বাতের সমস্যা বাড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় দীর্ঘ সময়ে এক পাশে শুয়ে থাকার কারণে হাড় ও অস্থিসন্ধিতে চাপ পড়ে। এতে শরীরে ব্যথা হয়। তা ছাড়া বেশি শীতে দেহের সবচেয়ে জরুরি অঙ্গগুলোকে গরম রাখতে হার্টকে বেশি কাজ করতে হয়। তাই সারা শরীরে এসময় ব্যথা বাড়ার প্রবণতাও থাকে। এ ব্যথা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে লাইফস্টাইলে আজ থেকেই কিছু্ পরিবর্তন আনতে পারেন। যেমন-
>>> প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট শরীরচর্চা করুন। অথবা আধা ঘণ্টা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে দেহে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। অন্যদিকে শরীরের ব্যথা কমে।
>>> শীতের কারণে হঠাৎই ব্যথা বেড়ে গেলে ব্যথা সারাতে ফিজিওথেরাপির সহায়তা নেয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের আয়ুর্বেদ বা ভেষজ তেলে ( কালোজিরা, ওলিভ অয়েল, সরিষা তেল, রসুন একসঙ্গে প্যানে গরম করে তৈরি করে নিতে পারেন বিশেষ আয়ুর্বেদ বা ভেষজ ম্যাসাজ তেল) শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গে ম্যাসাজ করতে পারেন।
>>> চীনা চিকিৎসা পদ্ধতি আকুপাংচারকে কাজে লাগাতে পারেন। তবে এ পদ্ধতি অনুসরণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
>>> সুপরিকল্পিত ডায়েট অনুসরণ করে শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে চেষ্টা করুন। অনেক সময় শরীরের অত্যধিক ওজন ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
>>> তাৎক্ষণিক ব্যথা কমাতে খুব ভালো কাজ করে আদার রস, আদা চা। আদা কুচি চিবিয়ে খান, রান্নায় আদা ব্যবহারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
>>> শরীরের ব্যথা কমাতে ভিটামিন সি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবারের জুরি নেই। তাই এসময় ডায়েটে প্রাধান্য দিন সামুদ্রিক মাছ, টুনা মাছ, বাদাম, ফ্ল্যাক্সসিড, সয়া নাগেট ইত্যাদি খাবারগুলোকে।
>>> এক টানা বসে থাকবেন না। অফিসে বসে কাজ করতে হলেও মাঝে মাঝে ব্রেক নিন। হাঁটাহাঁটি করুন। কোমর, পায়ের স্ট্রেচিং করুন। এ অভ্যাস না থাকলেই ধীরে ধরে শীতে আপনার শরীরে ব্যথার পরিমাণ বাড়তে শুরু করবে।
>>> জুতার সঙ্গে কোমর-হাঁটুর ব্যাথার সম্পর্ক আছে। যা অনেকেরই অজানা। তাই চেষ্টা করুন সঠিক মাপের ভালো মানের জুতা পরার। জুতা কেনার সময় নজর রাখুন নরম কুশন-যুক্ত সোল-এ র দিকে।
>>> শীতে খাবারে প্রাধান্য দিন প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল। ব্রকোলি, গাজর, বিনস্, অঙ্কুরিত ছোলা খান বেশি পরিমাণে। দুধ হজম হলে রোজই তা খেতে পারেন। ডিমও খান নিয়মিত। এতে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম-এর ঘাটতি পূরণ হবে।
>>> ব্যথা কমাতে নিজের ইচ্ছে মতো কোনো ওষুধ বা ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে শুরু করবেন না। চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে তবেই ওষুধ খান।
>>> ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থেকেও অনেক সময় কোমর-হাঁটু বা শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা হয়ে থাকে। তাই একজন চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ইউরিক অ্যাসিডও পরীক্ষা করিয়ে নিন। যদি দেখেন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকে সেক্ষেত্রে এড়িয়ে চলুন টম্যাটো, কাবুলি ছোলা, মুসুর ডালের মতো খাবার।
সূত্র: আনন্দবাজার