বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ::
সিটিজেন নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে। যারা আগ্রহী আমাদের ই-মেইলে সিভি পাঠান

সর্বস্ব দিয়েছেন ফুটবল জাদুকর, বাকি ছিল শুধুই প্রাণ

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১২৭ বার পঠিত

আজ থেকে ঠিক সাড়ে আট বছর আগে মারিও গোৎজের গোলে স্বপ্নভঙ্গ হলো আর্জেন্টিনার। রানার্স আপের মেডেল নিতে গিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন, হয়তো ভাবছিলেন ‘এত কাছে, তবু এত দূরে!’ এরপর গোল্ডেন বলটাও নিলেন সেদিন, তবে সেটা অনেক ভারী মনে হলো যেন, একবার ক্যামেরার সামনে তুলে ধরারও প্রয়োজন মনে করলেন না! আজন্ম চাওয়া যে ততক্ষণে হাত ফসকে গেছে!

পরের বার মিলল কিছু দিন পরই। একজন ফুটবলারের অনেকগুলো আজন্ম স্বপ্নের একটা, সেই ব্যালন ডি’অর ততদিনে তিনি চারবার জিতে গেছেন। সে সবগুলো নিয়েই বাজি ধরতে চাইলেন এবার। বলেই বসলেন, সব ব্যালন ডি’অর বিসর্জন দিয়ে হলেও একটা বিশ্বকাপ চাইতেন তিনি।

সেই বিশ্বকাপের আশা ততদিনে অনেক দূরে। চার বছর পর ২০১৮ বিশ্বকাপে ভরাডুবি যখন হলো দলের, তখন আশাটা ফিকেই মনে হচ্ছিল তার। ২০২২ বিশ্বকাপে তার বয়স বেড়ে মধ্য ৩০ পেরিয়ে যেত, এই বয়স তো ফুরিয়ে যাওয়ার! সঙ্গে আর্জেন্টিনার গুছিয়ে উঠে বিশ্বকাপের দাবিদার হওয়ার আশাটাও তো ছিল ক্ষীণ। এছাড়া ভাগ্য কি আর বারবার সুযোগ দেয়?

মেসিকে দিলো; বলা ভালো, মেসি অর্জন করলেন। ফাইনালে পেলেন ফ্রান্সকে, যে ফ্রান্স আবার শেষ চার বছরের সবচেয়ে ধারবাহিক দলগুলোর একটি, সেই কথা তিনি নিজেও বিশ্বকাপের আগে সাক্ষাৎকারগুলোর বারবার বলেছেন।

পুরো ক্যারিয়ারে জাদুকর উপাধিটা বহুবার শুনেছেন মেসি। এই ফ্রান্সের বিপক্ষে জিততে হলে তার সর্বশ্রেষ্ঠ জাদুটাই দেখাতে হতো। আর্জেন্টাইন মহাতারকা যেন তার চেয়ে বেশিই দেখালেন।

গোল করা, করানোটা তার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু রক্ষণকাজটা তেমন একটা করতে দেখা যায় না তাকে। আজ দেখা গেল; পেনাল্টিতে গোল করে, মুহূর্তের ঝলকে আনহেল ডি মারিয়াকে দিয়ে গোল করিয়ে কাজটা শেষ ভেবে বসেননি। নিচে নেমে এসেছেন, একবার বল ক্লিয়ার করে দলকে বিপদমুক্ত করেছেন, গ্রাউন্ড ডুয়েলে জিতেছেন চারবার, প্রতিপক্ষকে নিজেদের অর্ধে করেছেন দুটো ট্যাকলও। স্বপ্নপূরণের নেশায় মত্ত জাদুকরকে ঠেকায়, এমন সাধ্য কার!

কিলিয়ান এমবাপে কাছাকাছি গিয়েছিলেন। ৯৭ সেকেন্ডের কারিশমায় ছিনিয়েই নিয়ে যাচ্ছিলেন মেসির স্বপ্নটাকে। খেলাটা গেল অতিরিক্ত সময়ে, প্রথমার্ধে মিলল না গোলের দেখা। মিল দ্বিতীয়ার্ধে, গোলটা সেই মেসিই করলেন। আর্জেন্টিনাকে আরো একবার এনে দিলেন লিড। পথে আবারও এমবাপে বাঁধা! সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, মেসি কেবল প্রাণটাই দিয়ে দিতে বাকি রেখেছেন বুঝি!

তার এমন ত্যাগের দিনে আর্জেন্টিনা পা হড়কেছে, চলে গেছে খাদের কিনারেও; তবে খাদে পড়ে যায়নি। জাদুকরের সর্বস্ব দিয়ে দেওয়ার দিনে, মহানায়কের শেষ বিশ্বকাপের দিনে আর্জেন্টিনা যে অমার্জনীয় অপরাধটা করতেই পারত না! বিশ্বকাপ ফাইনালের ইতিহাসের অন্যতম সেরা পারফর্ম্যান্সটা তাই বিফলে যায়নি। শিরোপাটা উঠেছে হাতে, পূরণ হয়েছে আজন্ম সাধ, নশ্বর জীবনের একমাত্র চাওয়া, দাবি-দাওয়াও মিটে গেছে। মেসিই হয়েছেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন!

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved  2019 CitizenNews24
Theme Developed BY ThemesBazar.Com