মেট্রোরেলের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে মেট্রো যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। রাজধানীর গণপরিবহনের ভোগান্তি লাঘবে মেট্রোরেল এক মাইলফলক। মেট্রোরেলের উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আগারগাঁও এবং উত্তরা দিয়াবাড়িতে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।
রাজধানীবাসীর এই উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকেই মেট্রোরেলের ছবি দিয়ে নতুন যুগে প্রবেশকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রথমবারের মতো দেশে মেট্রোরেল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী তার দুই শতাধিক সফরসঙ্গী নিয়ে ট্রেনে চড়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও এসে নামেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন- তার ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা, বিভিন্ন কূটনৈতিক, সংসদ সদস্য, গণমাধ্যমকর্মী, শিশু, ক্ষুদ্র ণৃ-গোষ্ঠীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। যাত্রাশেষে আগারগাঁও স্টেশনে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে মেট্রোরেল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এদের অনেকে।
ঢাকার বাইরে থেকে অনেকে মেট্রোরেলে চড়ার জন্য আসেন। ইতিহাসের স্বাক্ষী এমন অনেককেই ফেসবুকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যায়। কেউ কেউ বলেন, এটি স্বপ্নের মতো। আমাদের দেশেও এখন মেট্রোরেল চলছে, ভাবতেই গর্ব হচ্ছে।
ফেসবুকে নাফি আহমেদ নামে এক যাত্রী লিখেছেন, ঢাকার রাস্তায় যানজটে প্রতিদিন কি পরিমাণ নাকানি চুবানি খেতে হয় শহরের বাসিন্দাদের, সেটা ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের কারোই অজানা নয়। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের অভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা, সিএনজি অটোরিকশা বাস চালকদের কাছে জিম্মি হওয়া এ যেন নিত্য নৈমিক্তিক বিষয়।দুর্বিষহ যানজট নিরসনের স্বপ্ন পূরণে আধুনিক গণপরিবহন মেট্রোরেল মেট্রোরেল ঢাকার বাসিন্দাদের কাছে মেট্রোরেল একটি স্বপ্ন, একটি আশা আকাঙ্ক্ষার নাম।
উত্তরার এক বাসিন্দা লিখেছেন, উত্তরা থেকে আসতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় জ্যামে থাকতে হতো। গাড়ির ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়তাম। সময়, অর্থ- সব কিছুই বেশি লাগতো। এখন অল্প সময় ও খরচে যানজটমুক্ত হয়ে চলাফেরা করতে পারবো, এটা বিরাট পাওনা উত্তরাবাসী তথা পুরো ঢাকাবাসীর জন্য।
ঢাকার আরেক বাসিন্দা লিখেছেন, ভীষণ খুশি লাগছে। বাসা থেকে হেঁটে স্টেশনে আসতে ৪-৫ মিনিট লাগবে। তারপর মেট্রোতে চড়ে গন্তব্যে চলে যাব। সময় এবং অর্থ দুটোই বাঁচবে।
মনিরুল ইসলাম আমানত লিখেছেন, প্যারিস মেট্রো, লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড, নিউইয়র্ক সিটি সাবওয়ে, দিল্লি মেট্রো, কলকাতা মেট্রোতে ভ্রমণ করার সৌভাগ্য হয়েছে। বাংলাদেশে কখনো মেট্রোরেল চালু হবে এটা আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কখনো চিন্তা করেনি, ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে। মেট্রোরেল আমাদের জাতীয় সম্পদ সকলের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো এই সম্পদ যাতে সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় পরিছন্ন ও নিরাপদ থাকে। আমাদের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই।
তবে ভাড়ার পরিমাণ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে একজন লিখেছেন, দেখে ভালো লাগলো তবে আমাদের পরিবহন খরচ মনে হচ্ছে ওদের তুলনায় একটু বেশি এটা নিন্ম আর মধ্যেবিত্তদের বাহন নয় আমাদের দেশের উচ্চবিত্ত আর VIP দের জন্য এই বাহন তৈরী করা হয়েছে।