বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। ৯৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রেসিডেন্ট জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। নেয়া হয়েছে হসপিস কেয়ারে। জর্জিয়ার প্লেইনসে নিজ বাড়িতেই তাকে হসপিস সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে বলে স্থানীয় সময় শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে কার্টার সেন্টার।
কার্টার সেন্টার বিবৃতিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৩৯তম প্রেসিডেন্টের প্রতি তার মেডিকেল টিম এবং পরিবারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তারা এই মুহূর্তে সাবেক এই প্রেসিডেন্টের পাশে একান্ত সময় কাটাচ্ছেন এবং তার ভক্তদের উদ্বেগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।’ তারপরও তাকে হসপিস কেয়ারে রাখা হয়েছে। হসপিস কেয়ার হলো এমন চিকিৎসা ব্যবস্থা যেখানে, রোগি তার অন্তিম মুহূর্তে থাকেন এবং সে সময় চিকিৎসার মাধ্যমে তার শারীরিক যন্ত্রণা এবং অস্বস্তি কমানো হয়।
জিমি কার্টারের নাতি এবং কার্টার সেন্টারের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান জেসন কার্টার শনিবার এক টুইটে বলেছেন, ‘এইতো গতকালই আমার দাদা-দাদি উভয়কে দেখে এলাম। তারা নিজ বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে পরিপূর্ণ ভালোবাসায় সময় কাটাচ্ছেন।’
জিমি কার্টার জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কাটিয়েছেন প্লেইনসে। ১৯৮২ সালে জিমি কার্টার এবং তার স্ত্রী রোজলিন (৯৫) মিলে কার্টার সেন্টার গড়ে তোলেন। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বজুড়ে শান্তি ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃত হিসেবে ২০০২ সালে নোবেল পায়। প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্টার সেন্টার প্রতিষ্ঠা করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। তবে কোভিডের সময় থেকেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এর আগে, ২০১৫ সালে জিমি কার্টারের যকৃত ক্যানাসার কোষ অপসারণ করা হয়। পরের বছর জানানো হয় যে, ক্যানসারের আর কোনো লক্ষণ অবশিষ্ট না থাকায় জিমি কার্টারের আর চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। সর্বশেষ গত অক্টোবরে জিমি কার্টারের ৯৮তম জন্মদিন পালন করা হয়।
১৯৭৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার আগে, জর্জিয়ার তৎকালীন গভর্নর হিসেবে খুব সামান্যই পরিচিত ছিলেন জিমি কার্টার। সেবারের নির্বাচনে জিমি জেরাল্ড ফোর্ডকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। পরে অবশ্য ১৯৮০ সালের নির্বাচনে রোনাল্ড রিগ্যানের বিপরীতে বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হন। এই পরাজয়ই মূলত তাকে বিশ্বে গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় উদ্যমী করে তোলে।
পাশাপাশি ২০২২ সালে কার্টার সেন্টারের ৪০ বছর পূর্তিও উদ্যাপন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কার্টার সেন্টার অন্যতম অগ্রগণ্য একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কার্টার সেন্টার আফ্রিকা এবং এশিয়ার দেশগুলোতে সবমিলিয়ে ১১৩টি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছে।