ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে দুই লাখ বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ভয়াবহ ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ পর সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ ঘোষণা দেন তিনি। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
ভূমিকম্পের পর তুরস্কের কাহরামানমারাস শহরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। ছবি: এপি
এরদোয়ান জানান, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ১১টি প্রদেশে এক লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৯টি বাড়ি নির্মাণ করা হবে। আগামী মাস থেকেই শুরু হবে নির্মাণকাজ। তবে এসব ভবনের কোনোটিই তিন-চারতলার বেশি হবে না বলেও জানান তিনি। এসব বাড়িতে ১৬ লাখ ৮০ হাজার মানুষের আশ্রয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
এদিকে তুরস্ক ও সিরিয়া সীমান্ত এলাকায় আবারও ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ৬.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে নতুন করে ৩ জন নিহত ও ২১৩ জন আহত হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে (৬ ফেব্রুয়ারি) তুরস্ক ও সিরিয়ার সীমান্তে পরপর ৭.৮ ও ৭.৬ মাত্রার দুটি বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। স্মরণকালের ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪৭ হাজার ছাড়িয়েছে। ওই ভূমিকম্পে এক লাখ ১০ হাজারের বেশি ভবন বিধ্বস্ত হয়। এতে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; উদ্বাস্তু হয়েছে ১০ লক্ষাধিক।
ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পের দুই সপ্তাহ পর আবারও ভূমিকম্প আঘাত হানলো। তুরস্কের ডিজাস্টার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি এজেন্সি (আফাদ) জানিয়েছে, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪ মিনিট (বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৪ মিনিট) ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটি এরই মধ্যে বিধ্বস্ত তুরস্কের অন্যতম প্রদেশ হাতায়ে আঘাত হেনেছে। আরও জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।
এ ভূমিকম্পে হাতায় প্রদেশের রাজধানী আন্তাকিয়ায় বেশকিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন করে আরও ৩ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ২১৩ জন। তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোইলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানার পর আরও অন্তত ৬ হাজার আফটারশক বা পরাঘাত রেকর্ড করা হয়েছে। সবশেষ ভূমিকম্পটি তেমনি একটি আফটারশক। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, আগেরগুলোর তুলনায় এটা বেশি শক্তিশালী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, তুরস্কের পাশাপাশি ভূমিকম্পটি সিরিয়া, মিশর ও লেবাননেও অনুভূত হয়েছে। তবে এতে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়।
এদিকে ভূমিকম্পের পর দুই সপ্তাহ ধরে তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ চলছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকেপড়াদের জীবিত কিংবা মৃত উদ্ধারের আশায় এখনো ভিড় করছেন স্বজনরা।
আল-জাজিরার সবশেষ তথ্যমতে, শক্তিশালী ভূমিকম্পে শুধুমাত্র তুরস্কেই এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আর সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৬ হাজার জনের।