আসন্ন ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। দেশটিতে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে বিরাট ক্ষয়ক্ষতির পরও নির্ধারিত তারিখে ভোট হওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।
সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চালানো এক জরিপে দেখা গেছে, গত মাসে দেশটিতে ভূমিকম্প হওয়ার পরও এরদোগানের খ্যাতি বিন্দুমাত্রও কমেনি।
বুধবার (২ মার্চ) তুরস্কের পার্লামেন্টে এক বক্তব্যের সময় আরো একবার ১৪ মে’র নির্বাচনের ওপর জোর দিয়ে এরদোগান বলেন, আসন্ন নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোকে উচিত শিক্ষা দেবে দেশের জনগণ।
মিডল ইস্ট আই জানায়, এরদোগানের ঘনিষ্ঠজনের সূত্রে জানা গেছে, এরদোগান মনে করেন ভূমিকম্পের কারণে তার রাজনৈতিক সুনামের কোনো ক্ষতি হয়নি।
এরদোগান আরো মনে করেন, সাম্প্রতিক কিছু সরকারি পদক্ষেপের কারণে সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন এরদোগান।
এদিকে এরদোগানের বিপক্ষে লড়াইয়ের জন্য কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নির্বাচনে সহজেই বিজয়ের আশা করছেন তিনি।
গত ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি প্রায় ২ হাজার নাগরিকের ওপর একটি জরিপ চালায় তুরস্কের সেন্টার ফর সোস্যাল ইমপ্যাক্ট স্টাডিজ। এতে দেখা যায়, ৪৪ শতাংশের বেশি মানুষ এরদোগানকে এখনো পছন্দ করেন।
জরিপের পরিচালক ওলাস তোল বলেন, ভূমিকম্পের পর উদ্ধারকাজের ধীরগতির কারণে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এরদোগানের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল মানুষ। তবে এতে বেশি প্রভাব পড়েনি তার সুখ্যাতিতে।
এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ১০ প্রদেশে ৩ লাখ ১০ হাজার বসববাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন এরদোগান।
ইস্তাম্বুলের ওজেগিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইভরেন বালতা বলেন, ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনরায় বাড়িঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় অনেক তুর্কি নাগরিক এরদোগানের প্রশংসা করেছেন।
উল্লেখ্য, এরদোগান ২০০৩ সাল থেকে তুরস্কের ক্ষমতায় আছেন। প্রথমে তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আছেন। ২০১৮ সালে এরদোগান তুরস্কের শাসনব্যবস্থায় পরিবর্তন আনেন।
এই ব্যবস্থায় বেশিরভাগ ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে। আগে প্রেসিডেন্টের পদটি ছিল মূলত আনুষ্ঠানিক পদ। নতুন ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন একই দিনে অনুষ্ঠানের নিয়ম করা হয়।